মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের বছরের পর বছর শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম ফেরদাউস হিলাল। তিনি উপজেলার লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
গত বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেনের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির বিষয়টি দুই শিক্ষার্থী মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযোগকারী দুই শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির শিকার আরও ৯ শিক্ষার্থীকে নিয়ে ইউএনও অফিসে আসে। এ সময় ইউএনও ভুক্তভোগী কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেন।
অভিযোগকারী দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানান, প্রধান শিক্ষক বছরের পর বছর ছাত্রীদের শ্লীলতাহানি করে আসছেন। আমার সহপাঠী ও ছোট বোনদের সঙ্গে তিনি সব সময় এমন করেন। এর সুষ্ঠু বিচার চাই। যাতে করে কোনো শিক্ষক আর এমন অশ্লীলতা না করতে পারে। এ শিক্ষার্থী আরও বলেন, আমাদের প্রতিবাদ করার মূল কারণ আমরা আর এক বছর আছি এই স্কুলে। কিন্তু পরবর্তীতে আমাদের ছোট বোনেরা যারা স্কুলে পড়বে তাদের সঙ্গে যেন এমনটি আর না ঘটে। আরেক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে প্রধান শিক্ষক থাকেন। সেই কক্ষের সামনে দিয়ে কোনো ছাত্রী হেঁটে গেলে তাকে তার কক্ষে ডেকে নেন প্রধান শিক্ষক। এরপর ভুক্তভোগী ছাত্রীদের প্রধান শিক্ষক কাউকে জড়িয়ে ধরেন, কাউকে চুমু খান। এমনকি স্পর্শকাতর স্থানে স্পর্শ করেন।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ফিরোজ আহমেদ মোল্লা বলেন, এর আগেও একটি ছোট্ট অভিযোগ নিয়ে বসে সমাধান করা হয়েছে। তবে এবার এতগুলো মেয়ে অভিযোগ করেছে, এর পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। এরপরেও আমরা বিষয়টি যাচাই করে দেখবো।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফেরদাউস হিলাল জানান, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও বানোয়াট। আসলে কোন ছাত্রীর সাথে আমার এধরনের কোন ঘটনা ঘটে নাই। আমার কক্ষে মাঝে মধ্যে আয়া-বুয়ারা প্রয়োজন হলে যাওয়া আসা করে এবং তাদের মেয়েরা আমার রুমে আসত। এর ফলে এক বছর আগে ফিরোজ মোল্লার (ম্যানেজিং কমিটির সদস্য) কাছে আমার বিরুদ্ধে এ রকম মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছিল। কিন্তু আমি এরকম কিছুই করিনি। তিনি আরও বলেন, আজও কয়েকজন ছাত্রী আমার বিরুদ্ধে এমন মিথ্যা অভিযোগ দাঁড় করিয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। ছাত্র-ছাত্রীরা আমার সন্তানের মতো, তাদের বিভিন্নভাবে শাসন, স্নেহ করতেই পারি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকির হোসেন জানান, দুইজন শিক্ষার্থী আমার নিকট অভিযোগ দিয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথাও বলেছি। তবে এই বিষয়ে আরও খতিয়ে দেখা হবে। তবে ঘটনার সত্যতা পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা নেওয়া হবে।