আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সুনাম নানা মাত্রায়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি ইত্যাদি ইতিবাচক ঘটনার পাশাপাশি সামাজিক অপরাধ, অনৈতিকতা, সন্ত্রাস ও অবক্ষয়ের মতো নেতিবাচক দিকগুলোও যথেষ্ট ব্যাপক-নষ্ট করে দিচ্ছে ইতিবাচক অর্জন। শিক্ষায়তন থেকে পেশাগত কর্মস্থল পর্যন্ত সর্বত্র এই ব্যাধির বিস্তার। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে নৃশংস হত্যাকা- ঘটছে। সামাজিক অস্থিরতার পরিণতিতে বাড়ছে অসহিষ্ণুতা। ঘটছে একের এক অপরাধ। গলা কেটে লাশ টুকরো টুকরো করে হত্যা, মৃত্যুর পর লাশ ঝুলিয়ে ‘আত্মহত্যা’ বলার মতো ঘটনাও রয়েছে। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক বন্ধন ভেঙে যাওয়া, অপরাধীদের পালিয়ে যাওয়া, মাদকাসক্তি এবং অর্থনৈতিক কারণে এসব ঘটনা ঘটে। আর এর অন্যতম কারণ হচ্ছে, আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ ও ভীতি কমে গেছে। অপরাধীরা মনে করে খুন করে পাড় পাওয়া যায়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনের মুখোমুখি করতে না পারলে নৃশংস খুন কমবে না। এখন তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করেও মানুষ খুনের মতো কঠিন কাজ করতে পারছে। সমাজে বিত্তবানদের টাকা-পয়সার প্রাচুর্য, দামি দামি বিলাস সামগ্রীর রূপ দেশের যুব সমাজকে আকৃষ্ট করে অপরাধপ্রবণ করে তোলে। দরিদ্র, বেকারত্ব, আর্থিক মর্যাদা লাভের আকাঙ্খা, শিল্পায়ন ও শহরায়ন ইত্যাদি অপরাধ প্রবণতার জন্ম দেয়। এছাড়াও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় যাবার লোভে বহুলোক অবৈধ কাজে জড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশে প্রশাসনিক দুর্বলতার কারণেও অপরাধীকে খুঁজে বের করে অনেক ক্ষেত্রে শাস্তি প্রদান করা সম্ভব হয় না। তাই দুর্নীতি ভয়াবহভাবে অপরাধ প্রবণতার জন্ম দেয়। ফলে অপরাধীদের খুঁজে বের করে সঠিত তথ্য প্রমানে ভিত্তিতে আইনের আওতায় আনতে হবে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে। আদালত যাতে অপরাধীর বিচার করতে পারে সে বিষয়টি কেয়াল করতে হবে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাকে। অপরাধীদের খুঁজে বের করে সঠিত তথ্য প্রমানে ভিত্তিতে আইনের আওতায় আনতে হবে আইন-শৃংখলা বাহিনীকে। আদালত যাতে অপরাধীর বিচার করতে পারে সে বিষয়টি কেয়াল করতে হবে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী কর্মকর্তাকে। বিগত দিনে যে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে সেগুলোর কোনোটির মূল রহস্যও আজো বের করা সম্ভব হয়নি। বিচার তো অনেক পরের কথা। রাজনৈতিক কোন্দল, বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারজনিত ঘটনার চেয়ে পারিবারিক কলহ, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত, শিশু ধর্ষণ, মাদক ও পরকীয়ার জের ধরেই অপরাধ কর্মকা- বেশি ঘটছে। ফলে দেশে সঠিক আইনের শাসন, সুস্থ রাজনৈতিক ধারা বজায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দেশপ্রেম ও গণতন্ত্র-চর্চা বাড়াতে হবে। মনে রাখতে হবে বিশৃঙ্খল সমাজে বসবাস করে উন্নত রুচি ও সংস্কৃতির অধিকারী হওয়া যায় না। তাই পরিকল্পিত ও বিন্যস্ত সমাজ গড়ে তুলতে হবে। তবেই মানুষ আইনের প্রতিশ্রদ্ধাশীল হবে এবং সমাজে নৃশংস ঘটনা কমে আসবে। তবেই মানুষ আইনের প্রতিশ্রদ্ধাশীল হবে এবং সমাজে নৃশংস ঘটনা কমে আসবে।