কোনধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল-ধামুরা সরকারি খালের উত্তর মোড়াকাঠী গ্রামের মোল্লাবাড়ি সংলগ্ন সরকারি খালে অবৈধ আত্মঘাতী ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রভাব খাটিয়ে গত দুইদিন থেকে বালু উত্তোলন করার ফলে চরম ঝুঁকির মুখে পরেছে স্থানীয় শহিদুল ইসলামের পাকা ভবন, সরকারি পাকা সড়ক, ব্রিজসহ একাধিক স্থাপনা। রোববার সকালে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দূর্যোগ ব্যবস্থাপণা অধিদপ্তরের আওতায় দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বামরাইল ইউনিয়নের মোড়াকাঠি নুরানী মাদ্রাসা সংলগ্ন পাকাসড়ক থেকে সেকেন্দার আলী দরবেশের বাড়ির মসজিদ পর্যন্ত পাঁচশ’ মিটার মাটির রাস্তা এইচবিবিকরণের জন্য ৩৯ লাখ ৪৯ হাজার ১৫০ টাকা বরাদ্দ করা হয়। রিয়ালেন্স কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে আসছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের কাজ শুরু করে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা থাকলেও গত কয়েকদিন পূর্বে কাজ শুরু করা হয়। বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুস সালাম সরদার, ব্যবসায়ী মিরাজ ফরাজী, স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুল মোল্লাসহ একাধিক বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয়ভাবে কাজটি দেখাশোনার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বামরাইল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আল-আমিন ফরাজিকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি (ইউপি সদস্য) কাজের দায়িত্ব পেয়ে অধিক লাভের আশায় প্রভাব খাটিয়ে শনিবার বিকেলে মোড়াকাঠী মোল্লাবাড়ি সংলগ্ন সরকারি খালে অবৈধ আত্মঘাতি ড্রেজার বসিয়ে নির্মানাধীন ওই রাস্তায় বালু ফালাচ্ছে। যেকারণে খাল সংলগ্ন পাকা ভবন, সরকারি পাকা সড়ক ও ব্রিজসহ একাধিক স্থাপনা চরম ঝুঁকির মুখে রয়েছে। স্থানীয়রা সরকারি খালে অবৈধ ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদ করলেও কোন সুফল মেলেনি। পরবর্তীতে স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহাকে জানানো হলে তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বলেন, সরকারি কাজে সরকারি জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করা দোষের কিছু নয়। অবৈধ আত্মঘাতী ড্রেজারের মাধ্যমে সরকারি খাল থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে মোবাইল ফোনে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধীকারি আশিকুর রহমান রাজুর বলেন, বিষয়টি ইউপি সদস্য আল-আমিন ফরাজি ভাল বলতে পারবেন। অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আল-আমিন ফরাজি বলেন, খাল থেকে বালু উত্তোলন করার জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহার অনুমতি রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা অয়ন সাহা মোবাইল ফোনে বলেন, আমি চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আছি। এসে সাক্ষাতে কথা বলবো। এ বিষয়ে উজিরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কেএম ইশমাম বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা সরকারি রাস্তার কাজে ওটা ব্যবহার করছে। সরকারি খাল ব্যবহারতো করতেই পারে বালু মহালে এতে কোন অসুবিধা নেই। তবে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, খাল থেকে বালু উত্তোলনের জন্য কাউকে বলা হয়নি। বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।