নেই কোনো স্বীকৃত সেন্টার-ব্যাক। সেটা যেন কোনো সমস্যাই হলো না রেয়াল মাদ্রিদের। তাদের রক্ষণে যে সেভাবে হানাই দিতে পারল না প্রতিপক্ষ! আক্রমণভাগের দাপুটে পারফরম্যান্সে তারা স্রফে গুঁড়িয়ে দিল জিরোনাকে। লা লিগার শিরোপা দৌড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল এগিয়ে গেল বড় এক ধাপ। সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে শনিবার লিগের শীর্ষ দুই দলের একপেশে লড়াইয়ে ৪-০ গোলে জিতেছে রেয়াল। দুই নম্বরে থাকা জিরোনার চেয়ে ৫ পয়েন্টে এগিয়ে গেছে তারা। শুরুতেই দুর্দান্ত এক গোলে দলকে এগিয়ে নেওয়া ভিনিসিউস জুনিয়র পরে করেন জোড়া অ্যাসিস্ট। জোড়া গোলের আলো ছড়ান জুড বেলিংহ্যাম। একবার জালের দেখা পান রদ্রিগো। শেষ মুহূর্তে হোসেলু পেনাল্টি মিস না করলেও ব্যবধান বাড়তে পারত আরও। গত রাউন্ডে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে ১-১ ড্রয়ের হতাশায় মাঠ ছাড়তে হয়েছিল রেয়ালকে। পরের ম্যাচেই জয়ের পথে ফিরল তারা। চলতি মৌসুমের চমক জিরোনা আসরে হারল স্রফে দ্বিতীয়বার। দুবারই রেয়ালের বিপক্ষে। গত সেপ্টেম্বরে তাদের মাঠে ৩-০ গোলে জিতেছিল মাদ্রিদের দলটি। এদের মিলিতাও, ডাভিড আলাবা, নাচো ফের্নান্দেস, আন্টোনিও রুডিগার- চার জনই চোটের কারণে মাঠের বাইরে। জিরোনার বিপক্ষে তাই স্বীকৃত কোনো সেন্টার-ব্যাক ছাড়াই নামতে হয় রেয়ালকে। আতলেতিকোর বিপক্ষে ম্যাচের আগে ওয়ার্ম-আপের সময় কাঁধে চোট পেয়ে বেঞ্চে বসে থাকতে হয়েছিল ভিনিসিউসকে। জিরোনার বিপক্ষে ফিরে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটেই চোখধাঁধানো এক গোলে দলকে এগিয়ে নেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। বাঁ দিকে ফেদে ভালভেরদে পাস দেন ভিনিসিউসকে। সামনে থাকা প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারকে এড়িয়ে জায়গা বানিয়ে ২৫ গজ দূর থেকে দুই জনের মাঝ দিয়ে ডান পায়ের শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ২৩ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ২১তম মিনিটে জিরোনার বক্সের ঠিক বাইরে এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা ফাউলের শিকার হলে ফ্রি-কিক পায় রেয়াল। ভালভেরদের নিচু শট অনায়াসে ঠেকান গোলরক্ষক। ৩২তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বেলিংহ্যামের শট লক্ষ্যে থাকেনি। তিন মিনিট পরই আরেকটি চমৎকার গোলে ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে রেয়াল। বাঁ দিক থেকে প্রতিপক্ষের একজনকে ফাঁকি দিয়ে দারুণ পাস দেন ভিনিসিউস। অফসাইডের ফাঁদ এড়িয়ে বক্সে ঢুকে এগিয়ে আসা গোলরক্ষককে কাটিয়ে বল জালে পাঠান বেলিংহ্যাম। এই দুজনের যুগলবন্দীতেই ৫৪তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করে ফেলে রেয়াল। বাঁ দিকে প্রতিপক্ষের একজনকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে ভিনিসিউসের নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক, ফিরতি বল কাছ থেকে ফাঁকা জালে পাঠান ইংলিশ মিডফিল্ডার বেলিংহ্যাম। তিন মিনিট পর চোটের ঝুঁকি এড়াতে বেলিংহ্যামকে তুলে ব্রাহিম দিয়াসকে নামান রেয়াল কোচ আনচেলত্তি। ৬১তম মিনিটে দারুণ গোলে ব্যবধান আরও বাড়ান রদ্রিগো। মাঝমাঠ থেকে ভিনিসিউসের পাস ধরে ছুটে গিয়ে বক্সে ঢুকে ডান পায়ের শটে গোলটি করেন ২৩ বছর বয়সী ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ৮৫তম মিনিটে দিয়াসের শট বাইরে দিয়ে যায়। ৮৯তম মিনিটে আর্দা গুলের বক্সে ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। তবে হোসেলুর স্পট কিক পোস্টে লাগে। পঞ্চম গোল তাই পাওয়া হয়নি স্বাগতিকদের। পুরো ম্যাচে রেয়ালের দাপটের চিত্র ফুটে উঠছে পরিসংখ্যানেও। গোলের জন্য ১৬টি শট নিয়ে ৬টি লক্ষ্যে রাখে তারা। জিরোনার ৫ শটের একটিও লক্ষ্যে ছিল না। ২৪ ম্যাচে ১৯ জয় ও ৪ ড্রয়ে রেয়ালের পয়েন্ট হলো ৬১। সমান ম্যাচে জিরোনার ৫৬ পয়েন্ট। ২৩ ম্যাচে ৫০ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপাধারী বার্সেলোনা তিনে, ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ চারে আছে।