জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্নেহধন্য ফুফাতো ভাই আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত সিটি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহনের পর দাপ্তরিক কঠোর নিয়মে ফিরেছে বরিশাল সিটি করপোরেশন। একটি দায়িত্বশীল দপ্তরের কার্যপদ্ধতি কেমন হওয়া উচিত তা এখন স্পস্ট হচ্ছে নগর ভবনের পরিচালন পদ্ধতিতে। অতীত সময়ে নগর ভবনে কর্মকর্তা তো দুরের কথা, ছিল না সাধারণ কর্মচারীদের আসা যাওয়ার সময়ক্ষন। সেই নগর ভবন এখন কড়া নিয়ম মেনে চলছে। পুরো নগরী সাজাতে হলে, তা নিয়মে আনতে হলে, আগে যে নগর ভবনকে নিয়মের আওতায় আনতে হবে, তা মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খুব সহজেই বুঝেছেন। তাই খুব অল্পদিনেই পুরো নগর ভবনকে নিয়ে এসেছেন নিয়ম-শৃঙ্খলার মধ্যে। আগের মত যেমন তেমন ভাবে কর্মচারী-কর্মকর্তাদের আসা-যাওয়া ও দায়িত্ব পালনে সুযোগ থাকছে না বরিশাল সিটি করপোরেশনে। এখন থেকে সঠিক সময়ে অফিসে আসা এবং কাজ শেষে ত্যাগ করতে হবে বাধ্যতামূলক ভাবে। দায়িত্ব পালন করতে হবে পুরো কার্যদিবসজুড়ে। ব্যক্তিগত কাজ আর অফিস এক করে দায়িত্ব অবহেলার সুযোগ থাকছে না নগর ভবনে। নতুন নিয়মতান্ত্রিকতার ও শৃঙ্খলার সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের দায়িত্বশীল মহল। এমন নিয়মে নগর ভবনে সেবা গ্রহীতাদের মধ্যেও আস্থা ফিরেছে। তাদের ভাষায় এটি যোগ্য মেয়রের যোগ্য পদক্ষেপ, যা আগে কখনো দেখেনি বরিশালবাসীসহ সিটি করপোরেশন। এমন নিয়মতান্ত্রিকতায় থাকলে অবশ্যই গতি ফিরবে বিসিসি’র কাজের। এমনটাই আশাবাদী নগরীর সচেতন মহল। বরিশাল সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ জানুয়ারি থেকে নগর ভবনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে প্রবেশ করছেন সকাল নয়টার মধ্যে। প্রবেশ করেই স্বাক্ষর করছেন হাজিরা খাতায়। সারাদিনে পূর্বের ন্যায় কাউকে কিছু না বলে ত্যাগ করা যাবে না কর্মস্থল। অতিরিক্ত প্রয়োজনে নগর ভবন থেকে বের হতে হলে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিজ নিজ শাখা প্রধানের কাছ থেকে একটি লিখিত অনুমতি নিতে হচ্ছে টোকেন আকারে। বের হওয়ার পথে থাকা গার্ডদের কাছে ওই টোকেন জমা দিয়ে বের হতে হয় এবং ফিরতে হয় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। এ নিয়মের বাহিরে কেউ গেলে তাকে ভোগ করতে হবে শাস্তি। এছাড়াও নগর ভবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বর্তমান মেয়রের নির্দেশনায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার যাবতীয় প্রক্রিয়া গ্রহন করা হচ্ছে। অদুর ভবিষ্যতে এ সকল প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্ব প্রথম নগর ভবনকে করা হবে উন্নত, আনা হবে একটি প্রকৃত দাপ্তরিক রূপে। বিসিসি’র একাধিক কর্মচারীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘবছর কোন শৃঙ্খলা ছিলোনা সিটি করপোরেশনে। পূর্বের মেয়র নিজেই পুরো পাঁচ বছরের হাতে গোনা ১০দিনও অফিস করেন নি। কিন্তু বরিশাল সিটি করপোরেশনের পঞ্চম পরিষদের মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত গত ১৪ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকে পুরো চেহারা পাল্টে গেছে নগর ভবনের। তিনি (মেয়র) নিজে যেমন সু-শৃঙ্খল মানুষ তেমনি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনেছেন নগর ভবনের কাজে কর্মে। সর্বশেষ অফিসের সময় অফিস করার যে কঠোর নিয়মটি তিনি চালু করেছেন তা অপরিহার্য ছিল বিশৃঙ্খল বরিশাল সিটি করপোরেশনের জন্য। নগর ভবনের সেবা নিতে আসা নাজমুল হাসান সানী জানান, সিটি করপোরেশনের এই চেহারা আগে কখনো দেখিনি। পূর্বে এসে বিভিন্ন শাখায় কাজের জন্য ধর্না দিতে হয়েছে দিনের পর দিন। সকাল নয়টাতো দুরের কথা বেলা ১২টার সময় এসেও অনেক শাখায় প্রয়োজনে লোক খুঁজে পেতাম না। কর্মকর্তা তো দূরের কথা কর্মচারীরাও অফিসে আসা-যাওয়া করতো নিজেদের ইচ্ছে মত। তবে এখন সব কিছুই হচ্ছে নিয়মের মধ্যে। তাই মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়বাতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন পুরো নগরবাসী। সার্বিক বিষয়ে বিসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইসরাইল হেসেন বলেন, আমরা চাই সিটি করপোরেশনে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে। কোনভাবেই সেবার ফাঁকি দেওয়া যাবে না। তাই সকাল নয়টায় সকল স্টাফকে অফিসে প্রবেশ করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে হচ্ছে। এরপর হাজিরা খাতা শাখা প্রধানের মাধ্যমে সচিবের কাছে চলে আসছে। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের পর যদি কোন স্টাফ আসে তাহলে বিলম্ভেও ব্যাখ্যা সচিবের কাছে গিয়ে দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, সকাল নয়টা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত অফিসে হাজির থাকা নিশ্চিত করতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগেরও নির্দেশনা রয়েছে।