গাজীপুরের কাপাসিয়ায় যানবাহনে চাঁদাবাজি নিয়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি ) কাছে অভিযোগ করেছেন এক ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক। বুধবার লিখিত এ অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযোগকারী উপজেলার রাওনাট সোনারখিল গ্ৰামের মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লা। তিনি ওই গ্ৰামের শাহাজ উদ্দীনের ছেলে। জাহাঙ্গীর কাপাসিয়া থানা মোড় থেকে রাওনাট বাজার পর্যন্ত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। গাজীপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো এই অভিযোগের সংযুক্তি হিসাবে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), গাজীপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবেও পাঠানো হয়েছে। এই সড়কে ৫৩ জন অটো চালক প্রতিদিন অটো চালায়। অভিযোগের সাথে আরো ১৪ জন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকের নাম সহ স্বাক্ষর করেছেন।
অভিযোগকারী মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লা জানান, কাপাসিয়া থানার মোড় থেকে রাওনাট পর্যন্ত চলাচল করা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন ২০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয়ে এসব চাঁদা আদায় করেন অটো রিক্সা সমিতির সভাপতি মোঃ বাদল, সাধারণ সম্পাদক কাজল মিয়া ও ক্যাশিয়ার মোঃ ইসমাইল। তারা কয়েকজন মিলে অটোরিকশাচালক সমিতি গঠন করেছেন।
এছাড়া এই সড়কে নতুন করে প্রতিটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নামাতে তাঁদের তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা এককালীন চাঁদা হিসেবে দিতে হয়। এসব বিষয়ে সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন মোঃ জাহাঙ্গীর মোল্লা। এরপর তাকে চাঁদা আদায়কারী ওই তিনজন বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়েছেন। পরবর্তীতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি তারিখ থেকে ২০ টাকার পরিবর্তে প্রতিদিন চাঁদা হিসেবে ১০০ টাকা নির্ধারণ করেন তারা। ফলে এত বড় অংকের চাঁদা পরিশোধ করে সড়কে অনেকেই ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হতে পারছেন না। চাঁদা বন্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
থানা মোড় থেকে রাওনাট এলাকার মধ্যে চলাচলকারী ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালক মোঃ রাসেল বলেন, স্বল্প আয়ের চালকদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়ায় তাদের আয় কমে যাচ্ছে।
অভিযুক্তদের একজন মোঃ বাদল বলেন, ‘ আমরা চাঁদা নিচ্ছি না। সবার সম্মতিক্রমে লাইনম্যানের জন্য ২০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল। বর্তমানে এই টাকাও নেওয়া হচ্ছে না। এসব অভিযোগ সত্য নয় ‘। সমিতি গঠন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা ওই সড়কে চলাচলকারী সব চালকদের নিয়ে সমিতি করেছি, চাঁদাবাজি করছি না'
গাজীপুর আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক জুয়েল ফকির জানান, চাঁদাবাজির বিষয়ে আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের নিয়ে একটি জরুরী সভা ডেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী বলেন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।