দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার পার্শ্ববর্তী বিরামপুর পৌর শহরের হাজী হোটেল এ- রেস্টুরেন্টের মালিক বেলাল হোসেনের এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ সাড়া ফেলেছে এলাকায়। তিনি অসহায় দরিদ্র ক্ষুদার্ত ব্যক্তিদের বিনামুল্যে খাবার দিয়ে নিজের খুশি আর আনন্দ সবার মাঝে বিলিয়ে দিচ্ছেন। তিনি জানান, মহান আল্লাহর সন্তষ্টি আর নিজের খুশির জন্য তিনি এ কাজ করে আসছেন। বিরামপুর পৌরসভার ঈদগাহ বস্তি এলাকার বেলাল হোসেন ছোটবেলা থেকে হোটেলের কর্মচারী হিসাবে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করতেন। তিনি বলেন মহান আল্লাহর রহমতে তার অবস্থার উন্নতি হলে তিনি নিজেই একটি হোটেল এ- রেস্টুরেন্ট এর দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। দোকান শুরুর পর থেকেই তিনি প্রায় ১১ বছর ধরে নিয়িমিতভাবে প্রতি বৃহষ্পতিবারে দুপুরে তার দোকানে আসা প্রায় ২৫০/৩০০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করে আসছেন। খাবারের মেনুতে থাকে সাদা ভাত, মাছ, গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, ডাল-সবজী, বিভিন্ন রকমের ভর্তা এবং মাঝে মাঝে খিচুড়ি। এছাড়াও তিনি প্রতিদিনই তার দোকানে আসা ৫/৭ জন প্রতিবন্ধী ভিক্ষুককে খাবার দিয়ে সন্তষ্ট করার চেষ্টা করেন। গত বৃহষ্পতিবার সরেজমিনে বিরামপুর হাজী হোটেল এ- রেস্টুরেন্টে গিয়ে দেখা যায়, ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ প্রায় ৩৫০ জনের মতো হত-দরিদ্র লোক এসেছেন দুপুরের খাবার খেতে। বেলাল হোসেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে এসব ক্ষুদার্ত লোকদের সিরিয়াল মেনে খাবারের ব্যবস্থা করছেন। তার হোটেলের কর্মচারীরাও এসব ক্ষুদার্তদের সেবা আনন্দচিত্তে করছেন। এ সময় অন্য কাস্টমার এলে তিনি হতদরিদ্রদের খাবার না শেষ হলে ব্যবস্থা করতে পারবেন না বলে বিনয়ের সাথে তাদেরকে অপেক্ষা করতে অনুরোধ করেন। খাবার খেতে আসা বৃদ্ধ শফিক বলেন, “আমার সন্তান নেই। বাধ্য হয়েই আমি এই বয়সে ভিক্ষা করে খাবারের ব্যবস্থা করি। একদিন ভ্ষিা করতে শহরে এলে শুনতে পাই এই হোটেলে বিনামুল্যে খাবার দেওয়া হয়। সেদিন থেকে নিয়মিতভাবে আমি এখানে এসে দুপুরের খাবার খেয়ে সন্তষ্ট।” বৃদ্ধ মমতাজ বেগম বলেন, “আমি গরীব। স্বামী-সন্তান কেউ নেই। ক্ষুদা লাগলে এই হোটেলে চলে আসি। হোটেল মালিক আমাকে পেট ভরে খাবার দেন। কোনো পয়সা নেন না।” হোটেল মালিক বেলাল হোসেন বলেন, “আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে সহ মা এবং স্ত্রী আছেন। এই হোটেলের আয় দিয়েই আমি সংসার ভালভাবেই চালিয়ে আসছি। আমি সন্তষ্ট।”