বর্তমান বাংলাদেশ দূর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, আর দেশবাসীও বিষয়টি বুঝতে পেরে এই উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখার লক্ষ্যে আবারো আওয়ামী লীগ সরকারকেই রাষ্ট্রক্ষমতায় বসিয়েছেন। তাদের এই কৃতজ্ঞতা-ই বলে দিচ্ছে এই দেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবেই গড়ে উঠবে। এ লক্ষ্যেই বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে। আর বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে কোন প্রতিবন্ধকতা দেখা দিলে তা প্রতিহত করার তাগিতে আমাদের সেনাবাহিনীর সদস্যরা সকল চ্যালেঞ্জ মাথায় নিয়ে সফলতা দেখিয়ে যাচ্ছে। এই সশস্ত্র বাহিনীর সক্ষমতা আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। যেন ভবিষ্যতে আরও কঠিন পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও তা মোকাবিলার সক্ষমতা থাকে এমনভাবেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে গড়ে তোলা হচ্ছে। শনিবার (২ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী সেনানিবাসে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের তৃতীয় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী এখন শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে অবদান রেখে এদেশের সুনাম বয়ে আনছে। আমাদের সশস্ত্র বাহিনী যেখানে যাচ্ছে সেখানেই তারা মানুষের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করছে। শেখ হাসিনা বলেন, সশস্ত্র বাহিনী দেশের যেকোনো প্রয়োজনে কাজ করবে। যে কারণে এই বাহিনীকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পরে সেনাবাহিনীতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পদাতিক ডিভিশন, বিগ্রেড, ইউনিট, প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছি। আর এখন আরও আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি। কারণ, আমরা চাই আমাদের এই সশস্ত্র বাহিনী দেশের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার উপযুক্ত হয়ে গড়ে উঠবে। সরকার প্রধান বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়ায়। শুধু তাই নয়; দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ব্যাপকভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীও সেভাবেই মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে। আর এভাবে আমরা সকলেই একত্রিত হয়ে আমাদের দেশটাকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব; এটাই আমাদের লক্ষ্য। বর্তমান সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার জন্য দেশের জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে সরকার প্রধান আরো বলেন, বার বার ভোট দিয়ে আমাদেরকে সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন বলেই আজকে আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যাবো ইনশাল্লাহ...। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমরা আমাদের দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি নিচ্ছি। তাছাড়া দারিদ্র বিমোচন করে দেশকে আরও উন্নত করা, সে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যার ফলে আজকে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিগণিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা। যে লক্ষ্যে আমরা বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধীভাতা প্রদান করার পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের জন্য সেই প্রি-প্রাইমারি থেকে এসএসসি পর্যন্ত আমরা বিনামূল্যে বই দিচ্ছি, বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছি, উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশেষ বৃত্তি দিচ্ছি, দেশে-বিদেশে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। বর্তমান বাংলাদেশকে এখন আর কেউ অবহেলা করতে পারে না। কারণ, বাংলাদেশ আজকে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আমাদের লক্ষ্য, আমরা সামনের দিকে এভাবেই এগিয়ে যাব। অনুষ্ঠান থেকে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে রেজিমেন্টের সকল সদস্যের প্রতি আহ্বান জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে দেশের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা, সরকার দলীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি ছাড়াও বাহিনীর সিনিয়র ও জুনিয়র কর্মকর্তা এবং প্রশাসনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদবিধারী এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে হেলিকপ্টারযোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানো মাত্রই তাঁকে স্বাগত জানান, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল খন্দকার মো. শাহিদুল এমরান। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। সালাম গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে প্যারেড পরিদর্শন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী ‘বীর গৌরব’ স্মৃতি ফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী রেজিমেন্টের দরবারে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা ছাড়াও মনজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশন দেখে মুগ্ধ হন সরকার প্রধান।