রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আলু উত্তোলনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে চাহিদা এবং দাম বেশি থাকায় আলু চাষীরাও অনেকটাই ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন। পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবীদ সাদেকুজ্জামান জানান, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৭ হাজার ২'শ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এবার লক্ষমাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে আবাদ এবং ফলন হয়েছে প্রচুর। সরেজমিনে বিভিন্ন আলুর ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ মাটি খুঁড়ে আলু তুলছে, কেউ কুড়াচ্ছে। কেউ ঠেসে ঠেসে বস্তা ভরছে। কোথাও আবার ডিজিটাল মিটারে চলছে ওজন। ক্ষেতের মাঝে ভর্তি হচ্ছে ভ্যান, ট্রলি ও ট্রাক। ক্ষেতের মধ্যে আলু তোলার এমন দৃশ্য উপজেলার বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে। কাক ডাকা ভোর হতে নানা বয়সের গ্রামীণ নারী ও শিশুরা দলবদ্ধভাবে আলু তোলার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন কাজ করে নারী শ্রমিকরা ২/৩ 'শ টাকা এবং খাবার জন্য আলু পায়। এছাড়া কেউ কেউ প্রতি ৬০ কেজি ওজনের বস্তা আলু তুলে দিয়ে ৪/৫ কেজি আলু পায়। হাজিপুর গ্রামের নুরজাহান বেগম, মমেনা বেগম, সিংহারপাড়া গ্রামের মন্জিলা বেগম, চক কৃষ্ণপুর গ্রামের আশিকুর রহমান জানান, আলু তুলে আমরা প্রতিদিন যেমন মুজুরী পাচ্ছি তেমনি আলু কুড়িয়ে ৫/৬ মাসের খাবার আলুও মজুদ করতে পারছি। ভেন্ডাবাড়ী বন্দরের আলু চাষী মাহমুদুল আলম শাহীন বলেন, চলতি বছরে সাড়ে ৬ বিঘা (৫০ শতাংশে বিঘা) জমিতে আলু চাষ করে উত্তোলনও করেছি। প্রতি বিঘায় আলু উৎপাদন হয়েছে (৬০ কেজি'র) ৭৫ হতে ৮০ বস্তা। ফলনও হয়েছে অন্যান্য মৌসুমের চেয়ে বেশ ভালো। তাছাড়া বাজারে চাহিদা ও দাম থাকায় ফসলের জমিতেই আলু বিক্রি হচ্ছে। চৈত্রকোল ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক, গুপিনাথপুর গ্রামের মাসুদ মিয়া, মুরালীপুর গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ ও মহেষপুর গ্রমের লতিফ মিয়া জানান, এ মৌসুমে আলু চাষে রোগ-বালাই কিংবা বাড়তি খরচ ছাড়াই ক্ষেতের আলু বেশ ভালো হয়েছে। রামনাথপুর ইউনিয়নের হাসান আলী জানান,এবারে আলুর যে ফলন হয়েছে এতে আমরা অনেক খুশী।