পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সভাপতি শাহবাজ শরিফ। গতকাল রোববার ফল ঘোষণার পর সংসদের প্রধান বিরোধী দল সুন্নি ইত্তেহাদ কাউন্সিলের (এসআইসি) সঙ্গে শাহবাজের দলের হট্টগোল বাধে। এর মধ্যেই বিজয়ী ভাষণ দিয়েছেন নতুন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সামনের কাজ ‘কঠিন’ কিন্তু ‘অসম্ভব’ নয়। খবর জিও নিউজের। পাকিস্তানের স্পিকার আয়াজ সাদিক তার ঘোষণায় বলেছেন, মিয়া মুহাম্মদ শাহবাজ শরিফ ২০১ ভোট পেয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ওমর আইয়ুব পেয়েছেন ৯২ ভোট। এরপর স্পিকার শাহবাজকে প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার ও ভাষণ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানান। ফলাফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এসআইসি আইন প্রণেতারা হট্টগোল শুরু করে এবং শাহবাজের বক্তৃতা ব্যাহত করার জন্য স্লোগান দেয়। এই নির্বাচনে যে শাহবাজ বিজয়ী হবেন তা অনেকটাই প্রত্যাশিত ছিল। কারণ তিনি পিএমএল-এন ছাড়াও আরও সাতটি দলের সমর্থন পেয়েছিলেন। নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর পেছনে পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুত্তাহিদা কওমি মুভমেন্ট-পাকিস্তান (এমকিউএম-পি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-কায়েদ (পিএমএল-কিউ), বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টি (বিএপি), পাকিস্তান মুসলিম লীগ-জিয়া (পিএমএল- জেড), ইস্তেহকাম-ই-পাকিস্তান পার্টি (আইপিপি) ও ন্যাশনাল পার্টির (এনপি) মতো দলের সমর্থন রয়েছে। দেশের ২৪তম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম বক্তৃতায় শাহবাজ শরিফ সকল সমর্থক ও জোটকে ধন্যবাদ জানান। এই পদে মনোনীত করার জন্য পিএমএল-এন সুপ্রিমো নওয়াজ শরিফকেও ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাস তুলে ধরে পিপিপি প্রতিষ্ঠাতা জুলফিকার আলী ভুট্টোর ‘জুডিশিয়াল কিলিং’-এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন শাহবাজ শরিফ। পাশাপাশি গণতন্ত্রের জন্য চূড়ান্ত মূল্য দেওয়ায় তার কন্যা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকেও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তিনি। কারও নাম উচ্চারণ না করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ক্ষমতায় থাকার সময় বিরোধীদের আক্রমণের নিন্দা করেন শাহবাজ শরিফ। এছাড়াও দেশের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী বলেও কটাক্ষ করেছেন তিনি। শাহবাজ বলেন, ‘এটি দুই নেতৃত্বের মধ্যে পার্থক্য। হাউজ সাক্ষী যে (পিএমএল-এন) কখনও প্রতিহিংসার রাজনীতিতে লিপ্ত হওয়ার কথা ভাবেনি।’ বিরাজমান সঙ্কট থেকে দেশকে বের করে আনার জন্য তার সরকারের পরিকল্পনা সম্পর্কে শাহবাজ বলেন, দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করতে ও চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে সর্বস্তরের মানুষকে এক হতে হবে। উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে টাকা আসবে কোথা থেকে? সশস্ত্র বাহিনীর সরকারি কর্মচারীদের বেতন কোথা থেকে দেওয়া হবে? এই সবই বছরের পর বছর ধরে ঋণের মাধ্যমে বহন করা হচ্ছে। এটি গতকাল দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।