একটা সময় রাজিবপুরের কোদালকাটি চরাঞ্চলবাসীর পুলিশী সেবা পাওয়া ছিল সোনার হরিণের মত। সাধারণ ডায়েরি করা থেকে শুরু করে প্রায় সকল পুলিশি সেবা পেতে কতই না কষ্ট করতে হয়েছে তাদের, পাড়ি দিতে হয়েছে বিশাল ব্রহ্মপুত্র নদ। এবার হাতের কাছে পুলিশী সেবা পাওয়ায় স্বপ্ন পূরণ হবে চরাঞ্চলবাসীর।
রাজিবপুরের চরে চরে, থানা এখন ঘরে ঘরে' এই শ্লোগান সামনে রেখে রাজিবপুর উপজেলা থেকে বিছিন্ন কোদালকাটি ইউনিয়নে অস্থায়ী পুলিশ সেবা কেন্দ্র কার্যক্রম শুরু করেছে রাজিবপুর থানা পুলিশ।
শনিবার (২ মার্চ)সকাল ১১ টায় কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ অস্থায়ী পুলিশ সেবা কেন্দ্র উদ্ধোধন করেন রাজিবপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ আশিকুর রহমান পিপিএম।
দীর্ঘদিনের স্বপ্নর প্রেক্ষিতে রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে সপ্তাহে একদিন করে বসবে অস্থায়ী পুলিশ সেবা কেন্দ্র (থানার সকল কার্যক্রম)। এর ফলে সময় মত আইন শৃংখলা সেবা মিলবে, কমবে অপরাধ প্রবণতা।
এই চরেই প্রায় লক্ষাধিকের উপরে মানুষের বসবাস হলেও নানা সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা। দুর্গম এই চরে জমি নিয়ে বিরোধ,চুরি ডাকাতি,মারামারিসহ নানা কারনে প্রায়ই ঘটে ছোট বড় আইন শৃংখলা অবনতির ঘটনা। তাদের মানবেতর এই জীবনে যাতায়াত ব্যাবস্থা সহজতর না হওয়ায় একটা সময় অনেক কষ্ট করে মিলতো পুলিশী সেবা। তাই দীর্ঘদিন ধরে চরাঞ্চলবাসীদের স্বপ্ন এবং দাবি ছিলো জরুরী পুলিশী সেবা পাওয়ার এখন থেকে সপ্তাহে একদিন থানা এখানে বসবে এটা আমাদের জন্য অনেক সুবিধার এমনটিই জানালেন কোদালকাটি মন্ডল পাড়া এলাকার আমিনুল ইসলাম।
রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমানের এই মহতী উদ্যোগে খুশি এবং নতুন ভাবে বেচে থাকার স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় চরের মানুষগুলো।
কোদালকাটি চর সাজাই এলাকার জুয়েল রানা জানান, জরুরী পুলিশী আমাদের চরবাসীর দির্ঘদিনের দাবি , চরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হলে কমবে অপরাধ প্রবণতা। তবে এই চর অঞ্চলের জন্য স্থানী ফাঁরি থানারও দাবি করেন তিনি।
রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান পিপিএম বলেন, বাংলাদেশ পুলিশকে গণমুখি ও জনবান্ধব করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় আইজিপি মহদয় ও জেলা পুলিশ সুপার মহদয় নানা মুখি উদ্যোগ গ্রহণ করছেন। তবে এই থানায় আমি যোগদান করার পর লক্ষ করে দেখেছি কোদালকাটি ইউনিয়ন ব্রহ্মপুত্র নদ দ্বারা বিচ্ছিন্ন একটি এলাকা এখানে যাতায়াতে অনেক অসুবিধা। তাই ভাবলাম পুলিশী সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমরাই কোদালকাটি গিয়ে সপ্তাহে একদিন শনিবারে আইনি সেবা দিব। এই পরিকল্পনার নিয়ে গতকাল মাইকিং করে এলাকাবাসীকে জানানো হয়েছিল আজ প্রথম দিনেই অভিযোগ তদন্ত করে ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলে থাকা ঝামেলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। মুলত জনগণের পুলিশী সেবা নিশ্চিত করতে আমাদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কোদালকাটি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির ছক্কু, রাজিবপুর থানার ওসি (তদন্ত) আতাউর রহমান, এস আই সহিজল ইসলাম ও জাকারিয়া জামান, ইউপি সদস্য বায়জিদ ইসলাম, মাসুদ রানা, আমিনুল ইসলাম মাষ্টার ও স্থানীয় সাংবাদিক বৃন্দসহ অনেকে।