রবীন্দ্রসংগীত নিয়ে দেশের সবচেয়ে বড় আয়োজন জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মেলন শুরম্ন হচ্ছে শুক্রবার। এবার উদ্বোধনী অধিবেশনে গাজায় ইজরায়েলি হামলা ও তাদের বর্বর গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে মনুষ্যত্বের জয়গান করা হবে। এ ছাড়া আরও বৈচিত্র্যময় সব আয়োজন থাকবে এবারের উৎসবে। শুক্রবার 'নিশিদিন ভরসা রাখিস, ওরে মন, হবেই হবে'্ত বোধন সংগীত হিসেবে কবিগুরম্নর এই গান পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠান শুরম্ন হবে। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় তিন দিনের এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। বুধবার ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের রমেশচন্দ্র দত্ত স্মৃতি মিলনায়তনে সম্মিলন পরিষদের এক সংবাদ সম্মেলনে এবারের আয়োজন সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এসময় সম্মিলন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নৃত্যশিল্পী শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ৪২তম অধিবেশনে ঢাকাসহ সারা দেশের সম্মিলন পরিষদের ৮২টি শাখার ৭ শতাধিক শিল্পী, সংগঠক ও সংস্কৃতিকর্মী অংশ নেবেন। সংবাদ সম্মেলনে এবারের আয়োজনের সাংগঠনিক বিষয়, প্রশিক্ষণ, প্রতিযোগিতা, অনুষ্ঠানের বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন পরিষদের তিন সহসভাপতি। তাদের মধ্যে লিলি ইসলাম বলেন, এই আয়োজন সারা দেশের শিল্পী, সংগঠক, সংস্কৃতিকর্মীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এবার অনুষ্ঠানের গান, গীতি ও নৃত্যালেখ্য পরিকল্পনা করা হয়েছে বিভিন্ন সমকালীন বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে। তিনি আরও বলেন, গানে থাকবে প্রেম ও বসন্ত, নারী দিবসে গীতি-আলেখ্য করা হয়েছে কবিগুরম্নর নারীদের লেখা গান নিয়ে। এর পাশাপাশি গাজায় ইজরায়েলি হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে আবৃত্তির একটি বিশেষ পরিবেশনাও থাকবে। সব মিলিয়ে এবারের প্রতিটি পরিবেশনা বৈচিত্র্যময় ও উপভোগ্য হতে যাচ্ছে। অন্যদিকে দুই দিনব্যাপী হবে নজরম্নল উৎসব। শুক্রবার থেকে ঢাকার গুলশান সোসাইটি লেক পার্কে দুই দিনব্যাপী তৃতীয় নজরম্নল উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। উৎসবটির আয়োজন করছ্তে বাংলাদেশ নজরম্নলসংগীত সংস্থা, গুলশান সোসাইটি ও ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার। এটি উদ্বোধন করবেন সমাজ কল্যাণমন্ত্রী দীপু মনি। এই অনুষ্ঠানে থাকবে জাতীয় কবি কাজী নজরম্নল ইসলামের গান, কবিতার আবৃত্তি ও রচনার ভিত্তিতে নৃত্য। খায়রম্নল আনাম শাকিল, ইয়াসমিন মুশতারী, নাশিদ কামাল, ফেরদৌস আরাসহ বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় নজরম্নলসংগীতের শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। জানা গেছে, ভারত থেকে মনোময় ভট্টাচার্য, রাঘব চট্টোপাধ্যায়, প-িত তুষার দত্ত, শ্রীরাধা বন্দ্যোপাধ্যায়, পায়েল কর, দেবারতি চক্রবর্তী আসবেন। এ ছাড়া সারা বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরাও সংগীত পরিবেশন করবেন এই উৎসবে। গত বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রম্ননি মিলনায়তনে এসব তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এই উৎসবের আহ্বায়ক খায়রম্নল আনাম শাকিল বলেন, শুদ্ধ সুর ও বাণীতে নজরম্নলসংগীত প্রচারের জন্য সাংবাৎসরিক ও চলমান যে বিশাল কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি, তার সঙ্গে বৃহত্তর জনসমাজের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা প্রতিবছর নজরম্নল উৎসবের আয়োজন করি। আমাদের প্রিয় কবির আদর্শ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে নতুন প্রজন্মের মাঝে প্রসারিত ও বিকশিত করাই হচ্ছে আমাদের মূল উদ্দেশ্। প্রসঙ্গত, প্রতিবারের মতো এবারও উৎসবে শুদ্ধ সুর ও বাণীতে গীত ১২৫টি নজরম্নলের গান আনুষ্ঠানিকভাবে ইউটিউবে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।