খুলনার পাইকগাছা ও দাকোপ উপজেলার সীমান্তবর্তী বরইতলা-মোজামনগর আন্ত:জেলা বেহাল খেয়াঘাট দিয়ে প্রতিদিন দুই উপজেলার শত-শত মানুষ চরম ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়ায় খেয়াঘাট দুটিতে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতে হয় স্থানীয়দের। জোয়ারের সময় কোনোভাবে পার হতে পারলেও ভাটার সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয়। দ্রুত সংস্কারের মাধ্যমে দুই পাড়ের ঘাট দুটি পারাপারের উপযোগী করার দাবি এলাকাবাসীর। আন্ত:জেলা খেয়াঘাটের মধ্যে উপজেলার সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ খেয়াঘাট হচ্ছে বরইতলা-মোজামনগর খেয়াঘাট। এ ঘাটটি দাকোপ ও পাইকগাছা দুই উপজেলার মধ্যে সংযোগ সৃষ্টি করেছে। শিবসা নদীর পশ্চিম পাশে রয়েছে পাইকগাছা উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের বরইতলা খেয়াঘাট। অপরদিকে পূর্বপাশে রয়েছে দাকোপ উপজেলার মোজামনগর খেয়াঘাট। মোজামনগর খেয়াঘাটের কিছুটা আরসিসি এবং কিছুটা বাঁশের সাঁকো রয়েছে। অপরদিকে বরইতলা অংশের সম্পূর্ণ ঘাটটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে তৈরি। শিবসা নদীর প্রবল স্রোতে প্রতিবছর সাঁকোর নিচের মাটি সরে যাওয়ায় প্রায়ই যেন হুমড়ি খেয়ে নদীতে পড়ে সাঁকোর সংযোগঅংশ। এ কারণে ভাটার সময় সাঁকোয় নৌকা অনেক নীচে ভিড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নারী শিশুসহ সাধারণ মানুষকে খেয়ার নৌকায় ওঠানামা করতে হয়। তীরে ভেড়া নৌকা থেকে ঝুঁকি নিয়ে নামতে হয়। মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য যানবাহন পারাপারে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। নদী পারাপাররত যাত্রী চিত্তরঞ্জন মন্ডলসহ কয়েকজন বলেন, জোয়ারের সময় নদীতে পানি বেশি থাকায় খুব সমস্যা না হলেও ভাটার সময় পার হতে গেলে বুক ধড়ফড় করে। সেলিনা বেগম নামে আরেক যাত্রী বলেন, একবার এ খেয়াঘাট পার হলে আর মনে হয় না আবার পার হই। এভাবে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হওয়ার কথা বাড়িতে গিয়ে মনে হলে ভয়ে শরীর শিউরে ওঠে। আরএক যাত্রী বলেন, খেয়াঘাটের সংযোগ পথটি বাঁশের সাঁকো হওয়ায় ভেঙে পড়ার ভয়ে থাকতে হয়। সাঁকোটি আবার কয়েক জায়গায় ভাঙা। ইজারাদার ইসমাইল সানা জানান, খেয়াঘাটটি সংস্কারের জন্য একাধিকবার আবেদন করেছি। কিন্তু সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। মাঝি সাইফুল্লাহ বলেন, প্রতিদিন এ খেয়াঘাট দিয়ে শত শত মানুষ পার হয়। পার হওয়ার সময় তাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নৌকাকে নদীর পাড় ও খেয়াঘাটে ঠিকমতো না ভিড়াতে পারায় অনেক সময় যাত্রীরা কাদামাটিতে পড়ে যায়। সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, এ খেয়াঘাটটি আন্তঃজেলা হওয়ায় জেলা প্রশাসক থেকে এটি ইজারা দেওয়া হয়। সরকার এখান থেকে প্রতিবছর অর্ধ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় করে থাকে। অথচ এ ঘাটের উন্নয়নে কোনো বরাদ্দ নাই। পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আল-আমিন বলেন, দুয়েক দিনের মধ্যেই খেয়াঘাটের উন্নয়ন কাজ করা হবে।