বগুড়া জেলার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চককল্যানী গ্রামের বাঙ্গালী নদীতে ভ্রাম্যমাণ হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ সদরের পশ্চিম বাঁধ এলাকার মৃত ইসমাইল হোসেনের ছেলে আজম আলী। সারাদিন হাঁসগুলো এখানে প্রাকৃতিক খাবার খায়। সন্ধ্যায় সেগুলোকে শুকনো স্থানে রেখে পরিচর্যা শেষে পুনরায় সকালে নদীতে উন্মুক্ত করা হয়। এক জায়গায় স্থির না রেখে পানি ও প্রাকৃতিক খাবারের প্রাপ্যতানুসারে স্থানান্তর করা হয় হাঁসগুলোকে। ভ্রাম্যমাণ খামারটি একদিকে বদলে দিয়েছে তার ভাগ্য, অন্যদিকে ওই এলাকাবাসী পেয়েছে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রেরণা। খামারী আজম আলী জানান, ছোট পরিসরে প্রায় ২০ বছর ধরেই বাঙ্গালী নদীর তীরে হাঁস পালন করছেন তিনি। তার খামারে ক্যামবেল, ব্ল্যাকহল ও বেলজিয়াম জাতের হাঁস রয়েছে। ৪ জন শ্রমিক হাঁসগুলোর দেখভাল করেন। সে শ্রমিকদের নিয়ে সেখানেই থাকছেন এবং খাচ্ছেন। চার শ্রমিকের মাসিক বেতন প্রায় ৪২ হাজার টাকা। বর্তমানে তার খামারে ১ হাজার ৬০০টি হাঁস রয়েছে। এখন গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০০ টি ডিম পাচ্ছেন তিনি। বাজারে চাহিদা থাকায় পাইকাররা খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১৮ টাকা হিসাবে কিনে নিচ্ছেন। ডিম বিক্রি করে প্রতিদিন ১৪ হাজার ৪০০ পাচ্ছে সে। যা থেকে মাসে ৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা আয় তার। খরচ বাদে প্রতিমাসে তার গড় আয় ১ লাখ ৯২ হাজার টাকা। ৬ মাস পর্যন্ত হাসগুলো ডিম দেবে। পরে মাংস উপযোগী হাসগুলো বিক্রি করলেও লগ্নিকৃত টাকার চেয়েও অতিরিক্ত টাকা পাওয়া যাবে। তিনি আরো জানান, আগে এর চেয়েও বেশি লাভ হতো। সকল খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভের পরিমান কমে গেছে। এখন কর্মচারীরাও বেশি বেতন চাচ্ছে। উপজেলা প্রানী সম্পদ অধিদপ্তর থেকে ভ্যাকসিন ও অন্যান্য সুবিধা পেলে আমাদের খরচ একটু কমে আসবে। তখন হয়তো বেশি লাভের মুখ দেখতে পারবো। চককল্যানী গ্রামের গৃহবধুরা জানান, আজম ভাইয়ের খামার দেখে আমরাও পারিবাড়িক ভাবে খামার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছি। অনেকে আবার ছোট আকারে খামার করেছেনো। আশা করি আমরাও খামারের পরিচর্যা করলে লাভবান হব। উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রেহেনা পারভীন বলেন, বাঙ্গালী নদীতে ভ্রাম্যমাণ হাঁস পালনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। চককল্যানী গ্রামের আজম আলীর হাঁসের খামারটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। শুধু তিনিই নন, শেরপুর উপজেলার অনেক এলাকাতেই হাঁসের খামার রয়েছে। হাঁসের খামারে অনেকেই বেকারত্ব দূর করেছেন। আমার দপ্তর থেকে খামারীদের সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ভ্যাকসিন, চিকিৎসা ও পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে।