সদ্য বিবাহিত স্ত্রীকে রেখে মাত্র দুইমাস আগে বাংলাদেশী পতাকাবাহী জাহাজ এম.ভি আব্দুল্লাহ’র নাবিক হিসেবে যোগদান করেছেন জেলার বানরীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের উমারপাড়া গ্রামের সন্তান মোঃ আলী হোসেন। আর সাউথ আফ্রিকা থেকে কয়লা বোঝাই করে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরের সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পরে বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এম.ভি আব্দুল্লাহ। এরপর জলদস্যুরা জিম্মি করে জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে। যারমধ্যে রয়েছেন মোঃ আলী হোসেন। বৃহস্পতিবার সকালে আলী হোসেনের স্বজনরা জানিয়েছেন, জলদস্যুরা জিম্মি করার পর পরই আলী হোসেন মোবাইল ফোনে বার্তা দিয়ে পরিবারকে জানিয়েছে মুক্তি পাওয়ার আগে আর হয়তো যোগাযোগ হবে না। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। এ কথা শোনার পর থেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পরেন উমারপাড়া গ্রামের ইমাম হোসেন মোল্লার ছেলে নাবিক আলী হোসেনের পরিবার। নাবিক আলী হোসেনের সদ্য বিবাবিত স্ত্রী ইয়ামনি বেগম জানান, আগামী ঈদ-উল আযহার ছুটিতে আলীর বাড়িতে ফেরার কথাছিলো। স্বামীকে ফেরত চাওয়া ছাড়া আর কোন কথাই নেই; বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাওয়া পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বাসিন্দা এই যুবতীর। নাবিক আলী হোসেনের বাবা ইমাম হোসেন মোল্লা অনেকটা বাকরুদ্ধ। অপরদিকে সন্তান জিম্মি হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই বিলাপ করে আলী হোসেনকে ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন করে আসছেন তার (আলী) গর্ভধারিনী মা নাছিমা বেগম। পরিবারের বরাত দিয়ে বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি রাহাদ সুমন জানান, গত বছরের জুলাই মাসে বিবাহ করেন আলী হোসেন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী আলী হোসেন। বিজ্ঞান বিভাগে ২০১৪ সালে সে মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন জিপিএ-৫ পেয়ে। এরপর ভর্তি হন নারায়নগঞ্জের মেরিন একাডেমীতে। সেখানে চারবছর পড়াশুনা শেষ করে ২০২০ সালে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন। সবশেষ গত দুইমাস পূর্বে কেএসআর এম শিপিং লিমিটেডের নিজস্ব খরচে সাউথ কোরিয়াতে গিয়ে এম.ভি আব্দুল্লাহ নামের ওই জাহাজের নাবিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।