জেলার হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামাল উদ্দিন মাঝিকে (৪০) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ শনিবার সকালে পালপাড়া গ্রামের একটি সয়াবিন ক্ষেত থেকে ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছেন। নিহত জামাল উদ্দিন মাঝি ওই এলাকার আব্দুল কাদের মাঝির ছেলে ও বরিশাল-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথের অনুসারী। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য পঙ্কজ নাথ ও সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ড. শাম্মি আহমেদের অনুসারীদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরধরে জামাল উদ্দিন মাঝিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সূত্রে আরও জানা গেছে, দুই এমপির অনুসারীদের মধ্যে পূর্ববিরোধের জেরধরে শুক্রবার আলীগঞ্জ বাজারে ড. শাম্মী আহমেদের অনুসারী ও পঙ্কজ নাথের অনুসারীরা দ্বন্ধে জড়িয়ে পরে।
নিহতের স্ত্রী আঁখি বেগম অভিযোগ করে বলেন, শাম্মি আহমেদের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন ঢালীর নেতৃত্বে তার সন্ত্রাসী বাহিনী নির্মমভাবে কুপিয়ে জামাল উদ্দিন মাঝিকে হত্যা করেছে। এমপি পঙ্কজ নাথ জানান, গত ২ মার্চ হিজলার ধুলখোলা ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জামাল উদ্দিন মাঝির বাড়িতে হামলা করে সংরক্ষিত সংসদ সদস্য ড. শাম্মি আহমেদের সমর্থক ইউপি চেয়ারম্যান জামাল ঢালীর নেতৃত্বে ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসীরা। তারা জামাল মাঝিসহ পরিবারের সাত সদস্যকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন। পরে জামাল মাঝির ঘরে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় জড়িত সাইফুল ইসলাম নামে এমপি শাম্মির এক অনুসারীকে শুক্রবার (১৫ মার্চ) পেয়ে মারধর করে জামাল মাঝি। এ ঘটনার পর হিজলা থানার ওসি (তদন্ত) দীপংকর রায় তার (এমপি পঙ্কজ) অনুসারীদের এলাকা ছাড়া করেন। এমনকি কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পঙ্কজ নাথের অভিযোগ, পুলিশ তার অনুসারিদের সেহরি পর্যন্ত খেতে দেয়নি। পুলিশের কারণে সবাই এলাকা ছাড়া হলেও জামাল মাঝি একা ছিলেন। সকালে তাকে পেয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে ড. শাম্মি আহমেদের অনুসারীরা। অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি (তদন্ত) দীপংকর রায় বলেন, গত ১৫ দিন ধরে ধুলখোলা ইউনিয়নে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। গত ১৫ দিনে থানা ও আদালতে পাঁচটি মামলা করেছে একপক্ষ অপরপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার একজনকে মারধরের খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে দেখি দুইপক্ষ সশস্ত্র অবস্থায় রয়েছে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ কোনো পক্ষের হয়ে কাজ করেননি বলেও তিনি উল্লেখ করেন। হিজলা থানার অফিসার ইনাচর্জ (ওসি) জুবাইর ইসলাম, সয়াবিন ক্ষেত থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় জামাল মাঝির লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।