কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়ন বতুল বাজার গ্রামের রাস্তা দিয়ে গেলে যেকাহারোর নজরে পড়বে চতুরপার্শ্বে বিরাণ ভূমি। সেই বিরাণ ভূমির ভিতরে জেগে আছে বিনা চাষে আলু, রসুন, সূর্য মূখী ভুট্টার গাছ। এই জমিতে আগে কখনো কোন চাষাবাদ হতোনা। কারণ জমিতে জো আসে মধ্য জানুয়ারিতে তখন কোন ফসল লাগানো যায় না। এজন্য বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট সরেজমিন গবেষণা বিভাগ দৌলতপুর খুলনার উদ্যোগে এসিআইএআর প্রকল্পের মাধ্যমে বীজ, সার, কিটনাশক দিয়ে ডিসেম্বর মাসের ১ম সপ্তাহে বিনাচাষে ফসল গুলো লাগানোর উদ্যোগ নেয়। এখন মাঠটি পুরাপুরি সবুজ। ঐ গ্রামের কৃষক আলাউদ্দীনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, তার এই জমি খালি পড়ে থাকত। সেই জমিতে তিনি বিনাচাষে আলু, রসুন, সূর্য মুখি চাষ করেছে। সে এক বিঘা জমিতে প্রায় ২৫/৩০ মন রসুন পাবে বলে আশা করছে। যার আনুমানিক মুল্য ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা। তার মতে অন্যকোন ফসল চাষ করে পাওয়া সম্ভব নয়। তার দাবি সে যেন আগামী বছর সে যেন আরও বেশি বেশি সহযোগিতা পেতে পারে। তার খেত দেখতে আসে প্রতিদিন অনেক কৃষক। তারাও আগামীতে এধরনের কাষাবদ করবে বলে জানিয়েছে। বতুল বাজার গ্রামের কৃষক আল মামুন সানা বলেন, তার গ্রামের অধিকাংশ বিল পতিত অবস্থায় পড়ে থাকতো। এখন সেই বিলে ১২ বিঘা জমিতে স্থানীয় কৃষকরা ফসল চাষ করে সফল হয়েছি। সেই সাথে কৃষি গবেষণার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তাদের সহযোগিতায় এটা করা সম্ভব হয়েছে। আগামী বছর আরও বেশি আলু, রসুনের বীজ বেশি পাই সেই দাবী জানাই। সরেজমিন কৃষি বিভঅগের বৈজ্ঞানকি সহকারী মোঃ জাহিদ হাসান বলেনন এ বছর আমরা বিনাচাষে আলু, রসুন ও ডিবলিং পদ্ধতীতে সূর্যমুখী ও ভুট্টা চাষ করতে কৃষকদের উৎসাহিত করেছি। এর ভিতর আলু, রসুন ও সূর্য মুখী বেশি ভাল হয়েছে। কৃষকদের রোপন করা থেকে শুরু করে সার্বক্ষনিক সেবা দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি তারা ভালই লাভবান হবে। সরেজমিন গবেষণা বিভাগ খুলনার উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন দক্ষিণাঞ্চলে জমিতে জো আসে দেরিতে। এজন্য হাজার হাজার বিঘা জমি পতিত হয়ে পড়ে থাকে। সে জন্য আমরা বিনা চাষে ফসল গুলো উৎপাদন করার জন্য এই এলাকা বেছে নিয়েছি। এতে করে আমরা সফলতা অর্জন করতে পেরেছি। সরেজমিন গবেষণা বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ হারুনর রশিদ বলেন, আমরা বিনা চাষে আলু, রসুন, সূর্যমুখী, ভুট্টা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করেছি। দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জমি পতিত হয়ে পড়ে থাকে। সেই পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে সরেজমিনে গবেষণা বিভাগ গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। অব্যহত রেখেছে। এ বছর কয়রার একজন কৃষক রসুন চাষ করে দেড় লক্ষ টাকা ইনকাম করেছে। এটাই আমার বড় পাওয়া। এ ধরনের ফসল উৎপাদন করতে আগামীতে এই অঞ্চলের কৃষকদেরকে আরও সহযোগিতা করা হবে।