জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসের সহকারিদের চরম অনিয়ম-দুর্নীতি উৎকোচ গ্রহনসহ কর্মকর্তার স্বাক্ষর জালের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘাদন যাবত দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা না থাকায় এলাকার ভূমি মালিকরা নানা হয়রানিসহ ভূমি সেবা থেকে দিন-দিন বঞ্চিত হয়ে আসছেন। ভূক্তভোগি ভূমির মালিকদের অভিযোগ, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্য্যালয়ে কর্মরত অফিস সহকারি শামীম, কম্পিউটার অপারেটর আল আমিন, সায়রাত সহকারি সিয়াম ও ফারজানা যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন অনিয়ম-দূর্নীতিসহ ভূমি মালিকদের কাছে উৎকোচ গ্রহনে জড়িয়ে পড়ছেন। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানাগেছে, মেলান্দহ উপজেলায় সহকারি কমিশনার(ভূমি)পদে দীর্ঘদিন যাবত শুন্যে রয়েছে। তাই ভূমি সেবাদানে ঐ পদে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে থাকেন। সম্পতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব লুৎফর রহমান অন্যত্র বদলীর সুবাধে দূর্নীতিবাজ অফিস সহকারি শামীম ভূমি মালিকদের কাছ থেকে প্রতিটি নামজারীর জন্য ১৫/২০হাজার টাকা উৎকোচ নিয়ে অন্যত্র বদলীকৃত নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের স্বাক্ষর ক্যান করে প্রায় শতাধীক নামজারি ডিসিআর দিয়ে লক্ষ-লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এসব ডিসিআর-নামজারি নিয়ে তহসিল অফিসে হোল্ডিং খুলতে গেলে মিসকেস নিষ্পতি রেজিষ্টারে নির্বাহী কর্মকর্তা/সহকারি কমিশনার (ভূমি) স্বাক্ষর না থাকায় হোল্ডিং খোলে না দেওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন শতাধিক ভূমির মালিকরা। বিপাকে পড়া এসব ভূমি মালিক তাদের প্রয়োজনের তাগিদে জমি ক্রয় বিক্রয় করতে না পেরে আসন্ন ঈদে মহা বিপাকে পড়েছেন তারা।
অপর দিকে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কার্য্যালয়ে কর্মরত কম্পিউটার অপারেটর আল আমিন, সায়রাত সহকারি সিয়াম ও ফারজানা তারা সহকারি কমিশনার (ভূমি) পদটি শুন্যে থাকা এমনকি কর্মকর্তার অফিসে অনুপস্থিতির সুবাদে অফিসটি দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। তারা প্রতিটি মিসকেইস ডিসিআর নামজারী করে দেয়ার স্বার্থে সরকারি ফি ১১শ ৫০টাকার পরিবর্তে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক তহশীল অফিসের কর্মরতদের কাছে ২ হাজার দুইশ টাকা করে আক্কেল সেলামী নিচ্ছেন তারা। এ ছাড়া যেসব ভূমির মালিকগণ সরাসরি তাদের কাছে যাচ্ছেন তাদের কাছে দ্বিগুন টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতারাতি আঙ্গুল ফলে কলাগাছ বনে যাচ্ছেন। যেন দেখার কেউ নেই। আর যেসব মিসকেইস গুলোর উৎকোচ পাচ্ছে না সে গুলো না মঞ্জুর করে আবেদন বাতিল করে দেয়ার অভিযোগ করছেন একাধিক ভূক্তভোগি ভূমির মালিক। এ ব্যাপারে মিসকেস নিষ্পতি রেজিষ্টারে কর্তমর্তার স্বাক্ষর না থাকা বিষয়ে এবং সাবেক কর্মকর্তার স্বাক্ষর ক্যানিং করে জাল স্বাক্ষর সর্ম্পকে অফিস সহকারি শামিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি এর কোন সদোত্তর দিতে পারেননি। পরে বলেন,স্যারের হঠাৎ বদলির কারণে স্বাক্ষর নেয়া সম্ভব হয়নি। তবে স্যারের সাথে আমার কথা হয়েছে তিনি কাপাসিয়া উপজেলায় কর্মরত আছেন, সেখানে গিয়ে স্বাক্ষর নিয়ে আসবো। আপর দিকে প্রতিটি নামজারীর জন্য ১৫/২০হাজার টাকা উৎকোচ নেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি প্রথমে তা’অস্বিকার করেন। পরে রাগান্বিত হয়ে বলেন, আপনারা তিলেরে তালবানিয়ে ফেলেন। অপর দিকে কম্পিউটার অপারেটর আল আমিন, সায়রাত সহকারি সিয়াম ও ফারজানার কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন অভিযোগ গুলো ভিত্তিহীন। আপনার যা বলার ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন।
এ বিষয়ে বর্তমানে কর্মরত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবা হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,অর্থ লেনদেন বিষয়ে নতুন যোগদান করায় তিনি অবগত নন। তবে বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান। এব্যাপারে জামালপুরের জেলা প্রশাসক শফিউর রহমানে কাজে ব্যস্ত থাকায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব)সাইফুল ইসলাম এর কাছে অনিয়ম-দূর্নীতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখে দোষিদের বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন।