পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী মো. শহিদুজ্জামান সরকার বলেছেন, আমি বিশ্বাস করি এই বারের বাজেট জনগণের বাজেট হবে। আমাদের হতাশার কিছু নাই। আমরা ১ লাখ কোটি টাকার বাজেট দিয়ে শুরু করেছি। এবার ইনশাআল্লাহ আমরা ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট করবো।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশান ফর ডেভেলপমেন্ট (রযাপিড) আয়োজিত 'বাজেট ২০২৪-২৫: মূল চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণ' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মো. শহিদুজ্জামান সরকার বলেন, বাজেট শুধু কোনও সংখ্যা নয়, অঙ্ক নয়। বাজেট শুধু কোনও আয় ব্যায়ের হিসাবও নয়। বাজেট প্রণীত হয় কয়েকটি বিষয় নিয়ে। প্রথম বিষয়টি থাকে একটি সরকারের রাজনৈতিক অভিলাষ, রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও মানুষের প্রতি সরকারের যে দায়বদ্ধতা তার ওপর। প্রতিটা সরকারের একটা পলিটিকাল এজেন্ডা থাকে। সেই এজেন্ডাকে অর্থনৈতিকভাবে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করার জন্য নিয়মতান্ত্রিকভাবে বাজেট দিতে হয়। আমাদের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, আমাদের ডেলটা প্ল্যান ২১০০, দ্রব্যমূল্যসহ ১১টা বিষয়ের প্রেক্ষিতেই আমাদের সরকার বাজেট প্রণয়ন করে।
তিনি বলেন, আমরা গত বছর টার্গেট করেছিলাম ৫ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করবো, হয় নাই। এটা ভাইস ভার্সা; আমরা বাণিজ্য-আমদানি সংকোচন করেছি বলে রাজস্বতে কিছুটা থ্রেট হয়েছে।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা হয়তো আছে কোনও কোনও জায়গায়। তবে এর সঙ্গে আমাদের অর্জনগুলোও বিবেচনা করতে হবে। আমাদের জীবনযাত্রার মান বেড়েছে, আমাদের মানুষের চাহিদার ধরন বেড়েছে। একসময় মানুষের ভাত- কাপড়ের দাবি ছিল। এখন আর মানুষ ভাত -কাপড়ের দাবি করে না। এখন মানুষ সুন্দর লাইভলিহুডের দাবি করে, সুন্দর জীবনযাপনের দাবি করে। এগুলো কিন্তু আমাদের অর্জন। এগুলোর জন্য আমাদের সরকার কাজ করে যাচ্ছে। তবে আমরা এর শেষ বিন্দুতে পৌঁছে গেছি তা বলছি না। আমাদের সরকার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে কর ও জিডিপি রেশিও বাড়ানোর জন্য।
এসময় কোনও প্রকল্প শুরু করে সঠিক সময়ে কাজ শেষ না করার প্রসঙ্গে এই প্রতিমন্ত্রী বলেন, একটা প্রকল্প যথা সময়ে বাস্তবায়ন না হলে দুমুখো সমস্যা হয়। একটা আমাদের ইউটিলিটি লেভেলের সমস্যা হয়, আরেকটা আমাদের সম্পদের দায়টা বেড়ে যায়। এই দুটোই আমাদের জন্য ক্ষতিকর। এই ব্যাপারে আমাদের মন্ত্রণালয় সতর্ক আছে, প্রকল্পগুলো যাতে বাস্তবসম্মত হয় এবং দ্রুত সমাপ্ত হয়।
আলোচনা সভায় জনগণকে কর দেওয়ার প্রতি আগ্রহী করার প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য মো. নাসের শাহরিয়ার জাহিদী বলেন, আমাদের রাজস্ব আহরণ কিন্তু একটা পর্যায়ে গিয়ে থেমে গেছে। এটা কিন্তু প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যন্ত যেতে পারছে না। জনগণকে জানাতে হবে কর কোথায় কাজে লাগছে। যদি মানুষ এটা সুবিধা বুঝতে পারে এবং এর প্রতি আস্থা তৈরি হয় তাহলে কিন্তু মানুষ কর দিতে আগ্রহী হবে।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রযাপিডের নির্বাহী পরিচালক ড. এম আবু ইউসুফ। এছাড়া রযাপিডের চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আব্দুল মাজিদ, ইআরএফ এর প্রেসিডেন্ট মো. রেফায়েত উল্লাহ মৃধা, প্রথম আলোর অনলাইন প্রধান শাখাওয়াত হোসাইন মাসুম প্রমুখ।