নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে বরিশাল সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিলের আগেই গোটা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অভিযোগ উঠেছে চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহামুদুল হক খান মামুনের বিরুদ্ধে।
ভোটকেন্দ্রে পোলিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন যেসব স্কুলের শিক্ষকরা, সেইসব শিক্ষকদের ইফতার অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মামুনের অংশগ্রহণে তীব্র সমালোচনার পাশাপাশি, ভোটগ্রহণের দিন সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সচেতন ভোটাররা। এমনকি ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা অফিসার নিজেই।
মঙ্গলবার দুপুরে অসংখ্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন, ভোটকেন্দ্রে পোলিং অফিসের দায়িত্ব পালন করে থাকেন মাধ্যমিক বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সেই শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ এবং গণসংযোগ ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করবে। যেকারণে বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী অপর চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। মঙ্গলবার সকালে শিক্ষকদের অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মামুনের অংশগ্রহণের বেশ কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পরলে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে।
তবে ইফতার অনুষ্ঠানে চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মামুনের উপস্থিতি অপ্রত্যাশিত দাবি করে অনুষ্ঠানের আয়োজক বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তারিকুল ইসলাম বলেন, আমন্ত্রণ ছাড়াই খান মামুন অনুষ্ঠানে ঢুকে পরেন। তবে শিক্ষক সংগঠনের সাথে যুক্ত একাধিক সূত্রের দাবি, চেয়ারম্যান প্রার্থী খান মামুনের টাকায় ওই ইফতারের আয়োজন করা হয়েছে।
ফেসবুকে ভাইলার হওয়া কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে, ইফতার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহামুদুল হক খান মামুন। একই অনুষ্ঠানে প্রধানঅতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আক্তারুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা কামাল, উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফয়সল জামিলসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা। গত ২৪ মার্চ নগরীর একে স্কুলে অনুষ্ঠিত হয় ইফতার অনুষ্ঠান। ওই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের মহানগরের সভাপতি হাজেরা মমতাজ মিতু। শিক্ষক নেতা তারিকুল ইসলামের পোস্ট করা ছবি নিয়ে সমালোচনা চলছে নেট দুনিয়ায়।
এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আক্তারুজ্জামান বলেন, ইফতার অনুষ্ঠানে এমন কোন রাজনৈতিক ব্যক্তি বা প্রার্থী থাকবে জানলে আমি সেখানে যেতাম না। তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা নির্বাচনকালীন কেন্দ্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার পর কোন প্রার্থীকে নিয়ে সরকারি শিক্ষকদের এমন আয়োজন মোটেও কাম্য নয়। এটা যারা করেছে তারা অপরাধ করেছে। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সদর উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহামুদুল হক খান মামুনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।