খুলনার দিঘলিয়ায় গোখাদ্যর দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে খামারীরা। গোখাদ্য ছোলা, ভুট্রা, ভূষি ও ফিড ও খড়ের দাম বেশি। তাই এ সমস্ত খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে চাষ করা ঘাসের পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়ে কৃষক ও খামারীরা গবাদিপশু লালন পালন করছেন। এজন্য ফসল কম হয় এমন আবাদি জমি, বাড়ির আঙ্গিনা, পতিত জায়গা ও সড়কের দুই ধারে ঘাস চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন অধিকাংশ কৃষক। অনেকেই নিজের খামারের চাহিদা পূরণ করেও বাজারে প্রতি আটি ঘাস ৫০ টাকা দরে বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন। অনেকেই গবাদিপশুর জন্য বাড়তি খাবার হিসেবে কাঁচা ঘাস কিনে খাওয়াচ্ছেন। এতে দোহাইল গরুর দুধের পরিমাণ বেশি পাচ্ছেন খামারীরা। সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, অনেক কৃষক ফসল ভালো হয় না এমন জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় খামারীরা বাজারের গোখাদ্যের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দিয়ে ঘাসের ওপর ঝুঁকে পড়ছে। ধানের জমিতে ধান বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যে নিয়মিত সেচ দিচ্ছে স্থানীয় কৃষক। ধান ও খড় দুটো বেশি উৎপাদন হলে কৃষক অধিক লাভবান হবেন। উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের ফরমাইশখানা গ্রামের মৃত খোশদেল মোল্লার ছেলে কামরুল ইসলাম জানান, আমরা দরিদ্র কৃষক। কৃষি কাজের পাশাপাশি ৪টি গাভীন গরু পালন করেছি। গাভীনের দুধ বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করি কিন্তু দ্রব্য মুল্যের সাথে তাল মিলিয়ে গোখাদ্য ও খড়ের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরু পালন করতে হাপিয়ে উঠেছি। বাধ্য হয়ে এ বছর ১ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করছি। এতে কিটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হয় না বলে লাভের পরিমাণ বেশি হয়। নিজের পালিত গরুর চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করতে পারব। দিঘলিয়ার দেয়াড়া পূর্বপাড়া নিবাসী মোঃ কামরুল ইসলাম জানান, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ৬ টি গাভীন পালন করেছি। গোখাদ্য ও খড়ের দাম বৃদ্ধির কারণে ঘাষ চাষ করেছে। এতে বিগত বছরের মতো গোখাদ্য ও খড়ের উপর নির্ভর করতে হয়না। বড় সুবিধা হলো ধান চাষের জন্য কৃষি অফিস থেকে যে ভাবে সহযোগিতা করেছেন ঘাস চাষে একই ভাবে উৎসাহিত করেন। এ বিষয়ে দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ কিশোর আহমেদ বলেন, গোখাদ্যর দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের পতিত জায়গা, অনাবাদি জমি ও বাড়ির আঙিনায় ও সড়কের ধারে উন্নত জাতের ঘাস চাষের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করছে উপজেলা কৃষি অফিস ও মাঠ পর্যায়ের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। এতে কৃষক ঘাস চাষে উৎসাহিত হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ ফজলুর রহমান জানান, উপজেলায় খামারীরা দুধ দহন ও বিক্রির জন্য ষাড় গরু পালন করেন। যে পরিমাণ গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে খামারীদের লোকশান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিকল্প হিসাবে খামারীদের অনাবাদি জমি, পতিত জায়গায় উন্নত জাতের ঘাস চাষ করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। কাঁচা ঘাসে দ্রুত গরুর বৃদ্ধি ঘটে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। অল্প দিনে গরু সুঠাম হবে। উন্নত জাতের ঘাস চাষ করে সফলতা পেলে গোখাদ্য নির্ভরশীলতা কমে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন এই কর্মকর্তা।