ইউটিউব দেখে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলায় মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে কাঁচা মরিচ চাষাবাদ করছেন কলেজ পড়ুয়া ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী নির্মল মার্ডী। তিনি উপজেলার ৯নং শিবনগর ইউনিয়নের আমডুঙি গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের মৃত বিরাম মার্ডীর এবং সুখি টুডুর ছেলে। এ কাজে সার্বিক সহযোগিতা করছেন মা সুখি টুডু।
জমিকে উত্তমরূপে তৈরি করে প্রয়োজনীয় জৈব ও রাসায়নিক সার মিশিয়ে বেড তৈরি করে মালচিং পেপার বিছিয়ে সেখানে নির্দিষ্ট দূরত্বে পরপর ছিদ্র করে চারা রোপণ করে কাঁচামরিচ চাষ করছেন। এ পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষ করে ভালো ফলন ও দাম পাওয়ার আসা করেন তিনি।
ইউটিউব দেখে গত বছর পরিক্ষামূলকভাবে মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে ৩০০ কাঁচা মরিচ চারা রোপণ করে কাঙ্খিত সফলতা পেয়েছেন। এবছর দেড় লাখ টাকায় ২৫ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে নামধারী-১৭০১, মধুমতি ও বিজলী ২০২০ জাতের মরিচ বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন।
সদস্য স্নাতক পাস করা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী নির্মল মার্ডী বলেন, মালচিং পেপার ব্যবহার করে কাঁচা মরিচ চাষ করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। প্রথমত একবার সার দিয়ে গাছ লাগালে পরে আর সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না। এছাড়া মালচিং পেপারের কারণে পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হয়। গাছের গোড়ায় ছাড়া পুরো বেড মালচিং পেপার দিয়ে ঢেকে দেওয়ায় কোনো ধরণের আগাছা জন্মাতে পারে না। আগাছা দমনে বাড়তি খরচ করতে হয় না। ফলে উৎপাদন যেমন বাড়ছে; তেমনই ফলনও অনেক বেশি হচ্ছে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে চাষ করায় ২৫ শতক জমিতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও কাঙ্খিত ফলন হলে সোয়া এক লাখ থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হবে। তবে তার মরিচ চাষাবাদে কৃষি বিভাগ থেকে কোনো প্রকার সহায়তা কিংবা পরামর্শ কোনটিই পাননি। এমন কি তার এলাকায় কৃষি বিভাগের কেউ দায়িত্বে আছেন কি না, তাও জানেন না এবং দেখেনও নি।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, এলাকার কৃষকরা সাধারণত ছিটিয়ে বপন করে চাষাবাদ করে থাকেন। এ বছর নির্মল মার্ডীর কাছ থেকে মালচিং পদ্ধতির এই চাষাবাদ দেখছেন, ফলন যদি ভালো হয়, হাতালে আগামীতে তারাও এই মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজি জাতীয় ফসল চাষাবাদ করবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, এ বছর কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ২০ শতক করে চারটি প্রদর্শনী প্লট রয়েছে। দাম বেশি হওয়ায় উপজেলার সব এলাকার কৃষকরা মরিচ চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। মালচিং পদ্ধতি কাঁচা মরিচ চাষাবাদে সার ও কীটনাশকসহ উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়।
ইউটিউব দেখে মালচিং পদ্ধতিতে কাঁচা মরিচ চাষাবাদ করেও কৃষি বিভাগ থেকে কোনো রুপ সহযোগিতা বা পরামর্শ পাননি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থী নির্মল মার্ডীর এমন অভিযোগের বিষয়ে এই কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সবাইকে খুঁেজ বের করা সম্ভব নয়। কৃষি অফিসে যোগাযোগ করলে সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।