ঈদগাঁওতে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সাময়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। গাড়ির সাইড দেয়া কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে ইউনিয়নের শিয়া পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে এক মেম্বার প্রার্থীর পোস্টারে নায়িকাদের অশ্লীল ও অশালীন ছবি লাগিয়ে দেয়ার প্রতিবাদে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই দিন রাতে খোনকার পাড়ায় ওই প্রার্থীর নির্বাচনী অফিসে এ সভা আহ্বান করা হয়। জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে ঈদগাঁও ইউনিয়নের শিয়া পাড়ায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মৃদু উত্তেজনা দেখা দেয়। এতে একপক্ষ তাদের কর্মী আহত হবার দাবি করলেও অপর পক্ষ তা অস্বীকার করেছে। মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলহাজ¦ ছৈয়দ আলম ও আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেল জাহান চৌধুরীর গণসংযোগ ও প্রচারণাকালে এ ঘটনা ঘটে। ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ শুভ রঞ্জন চাকমা জানান, শিয়া পাড়ায় দু চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচনী কর্মসূচি ছিল। ছৈয়দ আলম চেয়ারম্যানের সমর্থকরা শিয়া পাড়া ত্যাগ করছিল। অন্যদিকে সোহেল চৌধুরীর শুভাকাক্সক্ষীরা শিয়া পাড়ায় প্রবেশ করছিল। পথে উভয়পক্ষ মুখোমুখি হলে গাড়ির সাইড দেয়া কে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে সামান্য উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। চেয়ারম্যান প্রার্থী ছৈয়দ আলম আকিব নামে তার এক সমর্থক মারধরের শিকার হয়েছে বলে দাবি করেছেন। তিনি নির্বাচনী পরিস্থিতি উত্তপ্ত করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। তবে তার আরেক সমর্থক দুইজন আহত হয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান। অন্যদিকে চেয়ারম্যান প্রার্থী সোহেল জাহান চৌধুরী জানান, ঘটনাকে অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। ওখানে তেমন কিছু ঘটেনি। যে যার মত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছে। বরং তিনি পরিস্থিতি সামাল দিয়ে দ্রুত কালিরছড়ায় নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করতে চলে যান। এদিকে একই ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার পদপ্রার্থী গিয়াস উদ্দিন বাদে এশা এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। এতে তিনি বক্তব্যে অভিযোগ করেন, তার ঘুড়ি প্রতীকের পোস্টারে তার মুখ ও দাড়ির উপর নায়িকাদেরর উলঙ্গ ছবি লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি জঘন্য এ হীন কর্মের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি ক্ষোভ জানান। বলেন, ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য এ ধরনের অপকর্ম করা হয়েছে। উনি তার সমর্থক- শুভাকাক্সক্ষীদের ধৈর্যধারণের মাধ্যমে নির্বাচনী কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার কথা বলেন। স্থানীয় আলেমেদ্বীন মাওলানা শাকের আহমদের সভাপতিত্বে এতে অন্যান্য বক্তারাও নির্বাচনী আচরণ পরিপন্থী এ কাজের সমালোচনা করেন। তারা জড়িতদের সনাক্ত করার দাবি তোলেন। নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ন্যাককারজনক এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেন বক্তারা। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মাওলানা ছৈয়দ নুর হেলালি, স্থানীয় ইমাম এনামুল হক, এলাকার মুরুব্বি মনছুর আলম, শহিদুল ইসলাম শহীদসহ মেম্বার প্রার্থীর কয়েকজন সমর্থক। উপস্থিত লোকজন সর্বোচ্চ সংযোগ প্রদর্শনের মাধ্যমে নির্বাচনী জনসংযোগ অব্যাহত রাখার পরামর্শ দেন। সভায় এলাকার মুরুব্বী মোস্তাক আহমদ, মুকতার আহমদ, সৈয়দুল হক, মোঃ লেড়ু, জসিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, নুরুল আলম সহ স্থানীয় ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঈদগাঁওতে নির্বাচনী মাঠ উত্তপ্ত হবার আশঙ্কা করেছেন সচেতন মহল। অন্যদিকে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার সুধীজন আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুষ্ঠু, সুন্দর ও স্বাভাবিক রাখতে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অনুরূপ অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন ঈদগাঁও উপজেলা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবু তালেব। উল্লেখ্য, চলতি মাসের ২৮ তারিখ ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নসহ পাঁচটি ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে এসব ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা দিনরাত নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ২১ ও ২২ এপ্রিল নির্বাচন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হবে।