ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে আশ্রয় নেয়া মানুষ গুলোর দিন কাটছে আতঙ্কে। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ঘর নির্মাণ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় ২১ মাসে সরকারের আম্রয়ন প্রকল্পের ঘর বুঝে পান কালীগঞ্জ উপজেলার ভুমিহীনরা। পাকা ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা হলেও বেশকয়েটি ঘরের দেয়াল ফেটে গেছে। ফলে আশ্রয় নেয়া মানুষ গুলো এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
ঘর পাওয়া দরিদ্র মানুষ গুলোর চোখে মুখে এখন দুঃশ্চিতার ভাজ। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফাটল ধরা ঘরে থাকা যেন মরার উপর খড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে ঘর ছেড়ে বাইরে থাকবে এমন টা চিন্তা করছে। অনেকে বলেন,ভুমিহীন গরিব মানুষ বলেই ঘর পেয়েছিলাম কিন্তু এমন ঘর পেলায় সে ঘরে থাকা এখন মুসকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা এ বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। সেই সাথে আমাদেরকে ভাল মানের ঘর তৈরি করে দেয়া হোক। আর যারা ঘর নির্মাণে অনিয়ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি করছি। এসব ঘরের ফাটলের ঘবর পেয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সম্প্রতি পরিদর্শন করেছেন ও দ্রুত মেরামত করা হবে বলে ভুক্তভোগিদের অবহিত করেছেন।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মাইজদীয়া বাঁওড় পাড়ে সরকারের আশ্রয়ণ নির্মিত ঘরে ফাটল ধরেছে। সেখানে বসবাসরত বেদে সম্প্রদায়ের অসহায় পরিবার গুলো ঘর মেরামত করতে না পারায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই নিরুপাই হয়ে বসবাস করছেন ফাটল ধরা ঘরে। যে কোন সময় দেয়াল ধ্বসে প্রানহানীর ঘটনা। এদিকে এসব ঘর নির্মানের সময় দায়িত্বে ছিলেন সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন ও প্রকল্প কর্মকর্তা আব্দুল্লা হেল আল মাসুম। এই প্রকল্প কর্মকর্তার কারণে এ ঘর নিম্নমানের হয়েছে। ঘর গুলি ক্রমেই ফাটলের মাত্রা বেশি হচ্ছে।
বিশেষ করে বেদে সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে মূল ধারায় নিয়ে আসতে সরকারের উদ্যোগে ২০২২ সালের ২১ জুলাই ঝিনাইদহে কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের জগন্নাথপুর গ্রামের মাজদীয়া বাঁওড়ের ধারে বেদে সম্প্রদায়ের বসবাসের জন্য ৫৯ পরিবার নিয়ে স্বপ্ননীড় আম্রয়ন প্রকল্প গড়ে উঠেছে। গৃহহীনদের জন্য সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় মাইজদীয়া বাঁওড় পাড়ে ২ কক্ষ বিশিষ্ট ইটের পাকা ৫৯ টি ঘর নির্মাণ করা হয়। ঘর নির্মাণের মাত্র ২১ মাসের মাথায় সুবিধাভোগী বাবুল হোসেনের ৮ নং ঘরের দেয়াল ফেটে যায়। বর্তমানে দেয়ালের ইট বা দেওয়াল খুলে পড়ার উপক্রম হয়েছে। যেকোন সময় দেয়াল ধ্বসে প্রানহানির মতো ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। পরিবাররের লোকজন বলছেন, কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফাটলের ব্যাপারে জানালে তারা এসে পরিদর্শন করে ছবিও তুলে নিয়ে গেছেন। কিন্তু এর পরেও সংস্কার করা হয় নি। ১৩ নং ঘরের সুরুজ আলী বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ। আমার সংসারে ৫ জন সদস্য রয়েছে। অনেক কষ্টে ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সদস্যদের ভরণপোষণ করতে হয়। যে পরিমান আয় রোজগার হয় তা দিয়ে কোন রকম সংসার চলে। পাকা ঘর মেরামত করতে গেলে যে পরিমানে টাকার প্রয়োজন তা আমার নেই। বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আতঙ্ক আর অশংকার মধ্যে নির্ঘুম রাত কাটাতে হচ্ছে।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি। এদের মতো ৯ নং বাড়ির আসমত আলী, ৪২ নং ঘরের বাবুসহ বেশ কয়েকজনের ঘরে নানা ত্রুটি বিচ্যুতি দেখা দিয়েছে। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান বলেন, ভরাট জায়গায় উপর আশ্রয়নের ঘরগুলো নির্মাণ করার কারণেই মূলত অল্প সসময়েফাটল দেখা দিয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ফাটল ধরা ঘরগুলোর সংস্কার কাজ করা হবে।