কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের মোগরা গ্রামে বৃদ্ধ রিক্সাচালক আবদুস সাত্তারের বসতবাড়ি দখল করে ঘর নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে তার ভাই রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে। চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে এসে বুধবার দুপুরে আবদুস সাত্তার নিজ বসত ভিটা দেখতে গেলে রুহুল আমিন ও তার স্ত্রী মুন্নি বেগম আবদুস সাত্তারের (৬০) উপর ধাঁরালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বাড়িতে বন্দী করে রাখে। খবর পেয়ে একই দিন রাতে চট্টগ্রাম থেকে আবদুস সাত্তারের স্ত্রী ও ২ছেলে বাড়িতে এসে তার উপর কেন হামলা করা হয়েছে জানতে চাইলে রুহুল আমিন, তার খালাতো ভাই একই গ্রামের মরণ মিয়া, তার ছেলে ফারুক, সোহাগ, নুর মোহাম্মদের ছেলে কামরুলের নেতৃত্বে ২৫/৩০জনের সন্ত্রাসী বাহিনী আবদুস সাত্তারের স্ত্রী শানু বেগমের উপর হামলা চালায়, এ সময় শানু বেগমের আত্মচিৎকারে তার ছেলে সাইদুল ইসলাম বাবু (২৫) ও মোহাম্মদ শামীম (২৭) মাকে বাঁচাতে এগিয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর ধাঁরালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। হামলায় আবদুস সাত্তারের ছেলে সাইদুল ইসলাম বাবু গুরুতর আহত হয়। এ সময় সন্ত্রাসীরা আবদুস সাত্তারের ছেলে মোহাম্মদ শামীমের নিকট থেকে তার ম্যানি ব্যাগ ও নগদ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে জীবন বাঁচাতে তারা ৪জন আবদুস সাত্তারের অপর ভাই আবু মিয়া স্বাধীনের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিলে সন্ত্রাসীরা ওই ঘরের সামনে লাগানো দু’টি সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে পেলে ঘরটির দরজা, জানালায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় জীবন বাঁচাতে তারা জাতীয় জরুরী সেবায় ফোন করলে নাঙ্গলকোট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করে। হামলায় আহত শানু বেগম ও শামীমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে, অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আবদুস সাত্তার ও সাইদুল ইসলাম বাবুকে হাসপতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভূক্তভোগী আবদুস সাত্তার বলেন, উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের মোগরা গ্রামে আমার নামীয় ১৭০ নং বিএস চূড়ান্ত খতিয়ানে ৭শতক বসত বাড়ি ও ১শতক পুকুরের মালিক। আমি জীবিকার তাগিদে পরিবার নিয়ে চট্টগ্রামে থাকি। আমি চট্টগ্রামে রিক্সা চালিয়ে ও আমার ২ছেলে লেবার হিসেবে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করি। টাকা পয়সার অভাবে বাড়িতে এখনো ঘর নির্মাণ করতে পারিনি। বাড়ির জমিটি ছাড়া আমার আর কোন জমি নেই। খালি থাকার সুযোগে আমার ভাই রুহুল আমিন আমার বসত বাড়ির জমিটি দখল করে ঘর নির্মাণ করে পেলে। আমি বুধবার দুপুরে বাড়িতে এসে আমার জমিতে কেন ঘর দিয়েছে জানতে চাইলে আমার ছোট ভাই ও তার স্ত্রী মুন্নি বেগম ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে আঘাত করে রক্তাক্ত করে ঘরে আটক করে রাখে। পরে খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে আমার ২ছেলে ও স্ত্রী চট্টগ্রাম থেকে বাড়িতে আসলে আমার ভাই রুহুল আমিন ও খালাতো ভাই মরন মিয়ার নেতৃত্বে ২৫/৩০জনের সন্ত্রাসী বাহিনী স্ত্রী ও সন্তানদের উপর হামলা চালায়। আমরা সবাই প্রাণ বাঁচাতে আমার আরেক ভাইয়ের ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিলে সন্ত্রাসীরা সেই ঘরটিও ভাংচুর করে। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। নাঙ্গলকোট থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আবু বকর বলেন, ৯৯৯ নাম্বারে ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য-সহ স্থানীয়দের সহযোগীতায় আহতদের হাসপাতালে প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।