নাম মোছা. ইমা আক্তার। সরাইল সদরের কুট্রাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। বয়স সর্বোচ্চ ১৪-১৫ বছর। উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ইসলামাবাদ গ্রামের বাসিন্দা সৌদী প্রবাসী মো. ইয়াকুব আলীর মেয়ে ইমা। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ইমার বিয়ের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছিলেন পিতা মাতা। গত শুক্রবার ঘটা করে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। জেলা পলিসি ফোরামের সদস্যের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া। ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়ে ইমার বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও। নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তর ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ইসলামাবাদ গ্রামের অপ্রাপ্ত বয়স্ক ইমার সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মজলিশপুর ইউনিয়নের বড় বাকাইল গ্রামের মো. মোর্শেদ আলমের ছেলে মো. শাহিন মিয়ার সাথে সামাজিক ভাবে বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করেছিলেন পরিবার। শুক্রবার ছিল তাদের বিয়ে। ঘটা করে কার্ডের মাধ্যমে দাওয়াত দিয়ে সকল আয়োজনও ছিল সম্পন্ন। বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করতে প্রস্তুত ছিলেন বর ও কণের পক্ষ। ইমা কুট্রাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রী। বিষয়টি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পলিসি ফোরামের (ডিপিএফ) সদস্যের মাধ্যমে জেনে যান ইউএনও। তিনি ইমার বাল্যবিয়ে বন্ধে কাজ শুরূ করেন। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মনসুর আহমেদ ও ইউপি মো. হেবজু মিয়ার মাধ্যমে বিয়েটি বন্ধের ব্যবস্থা করেন। অপ্রাপ্ত বয়স্ক কন্যার বিয়ে আইনসিদ্ধ নেই এমন ইউএনও জানিয়ে দিয়েছেন পাত্র পক্ষের লোকজনদের। ফলে ইমার বাল্যবিয়েটি বন্ধ হয়। সরজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার বেলা ২টার পর অতিথিদের খাবার চলছে ইমার বাড়িতে। তবে বিয়ের কথা অস্বীকার করছেন পরিবারের লোকজন। ওই গ্রামের বেশ কয়েকজন লোক বলেন, এই গ্রামে বাল্যবিয়ে প্রশাসন বন্ধ করলে কিছু জনপ্রতিনিধির ভাল ধান্ধা হয়। তারা উভয় পরিবার থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে কূটকৌশল শিখিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করেন। হয়ত গ্রামের কোন নীরব জায়গায় অথবা দূরবর্তী কোন স্থানে কাজী ছাড়া মোল্লা বিয়ে দিয়ে সমস্যার সমাধান করেন। অতিতে এখানে এমন ঘটনা ঘটেছে। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, সেখানকার ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই বলেছেন ইমা অপ্রাপ্ত বয়স্ক। তাই স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইমার পরিবার, বরের পরিবার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে বাল্যবিয়েটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছি। বিয়েটি নিয়ে কোন ধরণের চালাকি করলে আর প্রমাণ পেলে তাদের বিরূদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।