খুলনার পাইকগাছায় পূর্ব শত্রুতার জেরে দু'দফা মারপিটে জেলা পরিষদ সদস্য রবি গাজীসহ ৫ জন আহতের ঘটনায় এখনো কোন পক্ষ থেকে মামলা হয়নি। দু'পক্ষের আহতরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় দু'পক্ষই পরস্পরকে দোষারোপ করেছেন। এদিকে আহত ব্যক্তির বহনকারী গাড়ী ভাংচুর করে জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম রবি'কে টেনে হেঁচড়ে মারপিট করে আহতের ঘটনায় এলাকায় চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, এ ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরোও বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে জেলা পরিষদ সদস্য রবি গাজীকে মারপিটের ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান রায়হান ফরিদ দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি এবং রোববার জেলা পরিষদের সদস্যরা আহত রবিউল ইসলাম রবি'কে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে চিকিৎসার বিষয়ে খোজ-খবর নিয়েছি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্য মফিজুল ইসলাম, হাসনা হেনা, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এমডি হালিম বাবু, ফারহানা হালিম, সাইফুল ইসলাম বাবু, দিলীপ হালদার, সাবিনা ইয়াসমিন ও সরোজিৎ বাবুসহ অনেকে। এর পূর্বে শনিবার বিকেলে খুলনা-৬ আসনের সংসদ মো. রশীদুজ্জামান খুমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবি গাজীসহ উভয় পক্ষের আহতদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, থানা পুলিশ'কে ভিডিও ফুঁটেজ দেখে মারপিটে জড়িতদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশসহ আহতদের পরিবার সূত্রে জানাগেছে, সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান গাজী ও খুলনা জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম রবি গাজীর ভাইপো ছাত্রলীগ কর্মী 'আপন'কে ক'দিন পূর্বে একটি অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগ কর্মী আবির হোসেন পক্ষের দ্বারা লাঞ্ছিত হয়। এ ঘটনার জেরে শুক্রবার সন্ধ্যার পূর্বে উপজেলার চারবান্দা বাজারে আবির হোসেন পক্ষ ও আপন পক্ষের সাথে তর্কবিতর্কের একপর্যায়ে দু'পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। মারপিটে আপন পক্ষের আজাদ ও প্রতিপক্ষ আবির, ইমরান ও সাগর সানা আহত হয়। এ সময় আবিরের মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। জানাগেছে, জেলা পরিষদ সদস্য রবিউল ইসলাম আহত আজাদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। সোলাদানা ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান গাজী অভিযোগ করেন, রাত ৮টার দিকে আজাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রাইভেটকারে খুলনায় নেওয়ার পথে হাসপাতাল মোড়ের একটি ক্লিনিকের সামনে পৌঁছালে আবির পক্ষদ্বারা ফিল্মী ইস্টাইলে প্রাইভেটকার ভাংচুর করে জেলা পরিষদ সদস্য রবি'কে টেনে হেঁচড়ে নামিয়ে মারপিট করে আহত করে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবি গাজী অভিযোগ করেন ইমরান, আবির ও পৌর ছাত্রলীগ সভাপতি (ডাক নাম) আকাশ ও তাদের অনুসারীরা মোটরসাইকেলে এসে গাড়ির গতিরোধ করে অতর্কিত হামলা চালিয়ে গাড়ীর গ্লাস ভাংচুর করে আমার মারপিট করে রাস্তায় ফেলে দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে রাত ১২টার পরে পুলিশি নিরাপত্তায় রবিউল ইসলাম ও আজাদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। অন্যদিকে আবির হোসেন পক্ষ অভিযোগ করেন প্রতিপক্ষ আপন পক্ষই চারবান্ধায় মোটরসাইকেল ভাংচুরসহ আমাদের মারপিট করে আহত করেন। পাইকগাছা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, দু'পক্ষের মারপিটের ঘটনায় এখনো কোন পক্ষই থানায় কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তিনি আইনি পদক্ষেপের কথা বলেন।