তীব্র তাপদাহ আর খরায় খুলনার পাইকগাছায় গুটি ঝরে পড়ায় আমচাষি হতাশ হচ্ছেন। এ অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের পাশাপাশি আম নিয়ে দুর্চিন্তায় পড়েছেন এ অঞ্চলের আম চাষিরা। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আম গাছে প্রচুর মুকুল ধরলেও সে তুলনায় গুটি ধরেনি। তারপর বৃষ্টির অভাবে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। বৈশাখের শুরুতে প্রচন্ড তাপদাহ শুরু হয়েছে। গত ক’দিন রাতে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা কম থাকলেও দিনে ৪০ ডিগ্রী বেশি থাকছে। তীব্র খরায় যেন পুড়ছে দেশ। খুলনার ওপর দিয়ে বয়ে চলেছে তাপপ্রবাহ। দেখা নেই বৃষ্টির। উপকূলে লবণাক্ত হাওয়ায় তাপমাত্রা আরও বেশী অনুভূত হচ্ছে। তবে বৃষ্টির অভাবে গুটি ঝরে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন আমচাষি ও বাগান মালিকরা। উপজেলায় ৫৮৫ হেক্টর আম বাগান রয়েছে। উপজেলার গদাইপুর, গোপালপুর, হিতামপুর, মালত, হরিঢালী, কপিলমুনি, সলুয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে আম গাছ রয়েছে। এ ছাড়া সড়কের পাশে ও উপজেলা ৪টি ইউনিয়ানে বিভিন্ন উন্নত জাতের আমগাছ রয়েছে। এ বছর আমের গুটি কম আসার পরও আমচাষি ও বাগান মালিকরা বুক বেঁধেছিলেন লাভের আশায়। কিন্তু বর্তমানে অনাবৃষ্টি ও দাবদাহে খরায় গাছ থেকে ঝরে পড়ছে স্বপ্নের আমের গুটি। যদিও কেউ কেউ রাত ও খুব ভোরে গাছের গোড়ায় সেচ ও স্প্রে করে আমের গুটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু অধিকাংশ চাষি পূঁজি এবং পানির অভাবে সেচ দিতে পারছেন না। বৃষ্টির অপেক্ষায় আছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলায় আমগাছের নিচে অসংখ্য ছোট, মাঝারি ও বড় আমের গুটি ঝরে পড়ে রয়েছে। উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আমবাগান মালিক আবুল কালাম বলেন, আমার আমের বাগানে খরার কারণে গুটি ঝরে পড়ছে। তারপর বৃষ্টির দেখা নেই। দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে। বাগানের গাছে তিন ভাগের এক ভাগ আম ঝরে পড়েছে। বৃৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে বেকায়দায় রয়েছি। আমচাষি মোবারক ঢালী বলেন, তীব্র খরার কারণে আমের গুটি ঝরে গেছে। আমগাছে সেচ ও কীটনাশকের মিশ্রণ স্প্রে করেও গুটি টেকানো যাচ্ছে না। এ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় আম নিয়ে চিন্তায় রয়েছি। উপজেলার কৃষি অফিসার কৃষিবীদ অসিম কুমার দাশ বলেন, খরার জন্য আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। তাপমাত্রা বাড়ার পরেও আমের গুটি যেটুকু ঝরছে সেটা স্বাভাবিক। কৃষক বা চাষিদের হতাশার কিছু নেই। গুটি বেশি ঝরছে মনে হলে সেচ দিতে হবে। তবে আমচাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি গাছের গোড়ায় পানি দেওয়াসহ ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার জন্য। এ সময় আম রক্ষার্থে বাগান মালিক ও চাষিদের গাছের গোড়া মাটি দিয়ে গোল করে বেধে বেশি করে পানি দিলে আমের গুটি ঝরা কমবে।