শুষ্ক মৌসুমে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের পানির স্থর সর্বনিন্ম পর্যায়ে নেমে আসায় কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌ পথে বোট চলাচল বন্ধের পথে। এতে করে চালক এবং যাত্রীরা মারাত্মক দূর্ভোগের সম্মুখীন হতে হচ্ছেন।
বিশেষ করে বিলাইছড়ি উপজেলার কেংড়াছড়ি হতে ফারুয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় ৫০কি: মি: নৌ পথে পানির স্থর এতই নীচে গেছে অনেক জায়গায় ছোট ছোট ইঞ্চিন চালিত বোট দিয়ে চলাচলরত যাত্রীদের বোট থেকে নামিয়ে দিয়ে প্রখর রোদে টেনে টেনে বোট চালাতে হচ্ছে। হ্রদের অনেক জায়গায় এক হাঁটুর নীচে পানি নেমে গেছে। এতে যে কোন সময় বন্ধ হয়ে যেতে পারে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি নৌপথ যোগাযোগ।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিলাইছড়ি উপজেলার ১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন এবং ২নং কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন এর মধ্যবর্তী কেরনছড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এই অংশে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্থর এতই নিচে নেমে গেছে যে, চলার পথে ছোট বোট হতে যাত্রীদেরকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সময় চালক ও যাত্রীরা একসাথে বোটকে টেনে নিয়ে কম পানির অংশটুকু পাড় করছেন। শুধু কেরংছড়ি এলাকা নয়, এই নৌ পথে, কেংড়াছড়ি, গাছকাটাছড়া, বিলাইছড়ি সদরসহ অনেক জায়গায় পানির স্বল্পতায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বড় লঞ্চ বা বড় বোট পরিবর্তে ছোট ছোট ইঞ্চিন চালিত বোট দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যাত্রীদের।
এই নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রী বিলাইছড়ি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নিরালা এবং যাত্রী রবিন তনচংগ্যা, মো: ইদ্রিচ জানান, বিশেষ করে জানুয়ারি হতে মে মাস পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদের পানির স্থর কমে যাওয়ায় আমাদের চলাচলে বেশ অসুবিধা ও দূর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক জায়গায় বোট হতে নেমে নিজেরা বোটকে টেনে নিয়ে কম পানির অংশটুকু পার করে আবার বোটে উঠে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
বোট চালক মো: নয়ন জানান, বেশ কয়েকমাস ধরে হ্রদের পানি স্বল্পতায় আমরা স্বাভাবিক গতিতে বোট চলাচল করতে পারছি না। ডুবন্ত চরে বোট আটকে যাচ্ছে। এতে করে যাত্রীদের বোট থেকে পানিতে নামিয়ে এই প্রখর রোদে বোটকে টেনে নিয়ে যেতে হচ্ছে কয়েকটি জায়গায়। এতে করে যাত্রীদের যেমন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তেমনী চালককে মারাত্মক সমস্যার সম্মুখিন হচ্ছে হচ্ছে।
১নং বিলাইছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি দেওয়ান জানান, এই মৌসুমে কাপ্তাই-বিলাইছড়ি ও রাঙ্গামাটি নৌ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা বেশ অসুবিধা ও দূর্ভোগের সম্মুখীন হন। কাপ্তাই হ্রদের যেখানে নাব্যতা কমে গেছে সেইখানে সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল হতে সদর ইউনিয়ন এবং কেংড়াছড়ি ইউনিয়ন এর কিছু শ্রমিক দিয়ে হ্রদ হতে মাটি অপসারণ এর মাধ্যমে কিছুটা হলেও নৌ চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিগত কয়েক বছর আগে পানি উন্নয়ন বোর্ড হতে জরিপ করে গেছে যেখানে নাব্যতা কম, সেইখানে ড্রেজিং করবে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোন কার্যক্রম দৃশ্যমান হয় নাই।
বিলাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামশেদ আলম রানা বলেন, বিলাইছড়ি উপজেলার জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের উদ্যোগে ব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক করার প্রয়াস অব্যাহত আছে। এই কাজে সোমবার হতে ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের আওতায় কিছু শ্রমিক দিয়ে হ্রদ হতে মাটি অপসারণের কাজ শুরু করা হয়েছে। অচিরেই পানি উন্নয়ন বোর্ড এইসব জায়গায় ড্রেজিং এর কাজ শুরু করবেন বলে আমরা আশা করছি।