মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদ সমর্থক বারেক চেয়ারম্যান গ্রুপ ও গোলাম সারোয়ার কবীর সমর্থক গ্রুপের সাথে সংঘর্ষে থানার ওসি ও পুলিশ সদস্যসহ ৯ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ও পুলিশকে পিটিয়ে আহত করায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিরাজদিখান থানা পুলিশ। সোমবার বিকেল ৫ টার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া কলেজগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে হাজির হলে তাদের উপর হামলা চালায় বারেক চেয়ারম্যানসহ তার গ্রুপের লোকজন। এতে পুলিশ পরিদর্শক সহ সিরাজদিখান থানা পুলিশের ৯ সদস্য আহত হয়েছে। পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক কৃতরা হলেন, উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের কুচিয়ামোড়া গ্রামের মৃত কামাল উদ্দিনের ছেলে ইসরাফিল, বড়বর্তা গ্রামের মতিউর রহমানের তৌফিক আহমেদ, মৃত আবুল কাশেমের ছেলে ফরহাদ, কুচিয়ামোড়া গ্রামের মৃত এসহাক বেপারির ছেলে আ.হাকিম, ইসলামপুর গ্রামের মৃত কোরবান আলীর ছেলে আরশাদ, বরবর্তা গ্রামের আ.রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম, কুচিয়ামোড়া গ্রামের ইসরাফিলের ছেলে সৈকত, বড়বর্তা গ্রামের মৃত হাসেম বেপারীর ছেলে আ.বারেক বেপারী ও বড়বর্তা গ্রামের তোপাজ্জলের ছেলে তুষার। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেয়াইন ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ আলী ও তার ছেলে আসিফ শেখ স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সারোয়ার কবীরের সমর্থনসহ তার পক্ষে কাজ করেন ও কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল বারেক ও রাকিব রাজু ও ফরহাদ নামে আরো বেশ কয়েকজন মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদের সমর্থনসহ তার পক্ষে কাজ করেন। নির্বাচনে মহিউদ্দিন আহমেদ জয়ী হলে বিভিন্ন স্থানে গোলাম সারোয়ার কবীরের সমর্থক আসিফসহ তাদের লোকজনদের উস্কানীমূলক কথাবার্তাসহ বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছিলো তারা। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে কুচিয়ামোড়া কলেজ গেট এলাকায় কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ আলীর ছেলে আসিফকে দেখতে পেয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করাসহ আফিসের উপর দিয়ে মোটর সাইকেল উঠিয়ে দেয় আবদুল বারেক চেয়ারম্যান গ্রুপের রাকিব রাজু ও ফরহাদরা। এতে চেয়ারম্যান আশরাফ আলীর ছেলে আসিফ তাদের মোটর সাইকেল উঠিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ করলে রাকিব রাজু ও ফরহাদদের সাথে তাদের মারপিটের ঘটনা ঘটে। এতে বারেক চেয়ারম্যান গ্রুপের রাকিবসহ আরো একজন আহত হয়। মারপিটের জেরে কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফ আলীর সমর্থক সৈয়দপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান আলীকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করে গুরুত্বর আহত করে কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল বারেকসহ তার লোকজন। পরে তাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। গুরুত্বর আহত প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহজাহান আলীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। খবর পেয়ে সিরাজদিখান থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলে কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল বারেকের নেতৃত্বে রাজু ও ফরহাদ সহ শ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল পুলিশের উপর হামলা চালায় এতে পুলিশ পরিদর্শক সহ থানা পুলিশের ৯ সদস্য আহত হয়। পরে ঘটনাস্থল থেকে সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল বারেক গ্রুপের ৯ জনকে আটক করা হয়।
এ বিষয়ে গোলাম সারোয়ার কবীরের সমর্থক মোঃ আসিফ শেখ বলেন, নির্বাচনে কবীর ভাই হেরে যাওয়ার পর থেকে তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল। তারা আমাদেরকে বিভিন্ন স্থানে পেয়ে উস্কানিমূলক কথাবার্তাসহ মারধরের হুমকি দিয়ে আসছিলো। বিকালে কলেজ গেট এলাকায় বসে ছিলাম তখন রাকিব,রাজু ও ফরহাদ আমাদের উপর মোটর সাইকেল উঠিয়ে দেয়। এ নিয়ে তাদের সাথে আমাদের মারামারি হয়। পরে পুলিশ আসলে তারা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এ ব্যপারে কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল বারেকসহ তার লোকজনের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব না হওয়ার তাদের বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ ব্যপারে সিরাজদিখান ও শ্রীনগর থানা এলাকার দায়ীত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) তোফায়েল হোসেন বলেন, আমরা সাবেক চেয়ারম্যান বারেক সাহেবের একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সেখানে যাই। আশ্রাফ চেয়ারম্যানের লোকজন যেই পাশে অবস্থান করছিলো সেই পাশে আমি গেলে শুনতে পাই সাবেক চেয়ারম্যান বারেক সাহেবের লোকজন পুলিশের উপর অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের সিরাজদিখান থানার পুলিশ পরিদর্শক সহ আনুমানিক ৯ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে আটক করে থানায় পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি সাভাবিক আছে, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা আছে।