রাঙ্গামাটির বৃহত্তর কাপ্তাই হ্রদে তিন মাসের জন্য সকল প্রকার মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ কৃত্রিম জলাধারে কাপ্তাই হ্রদে কার্প ও রুই জাতীয় মাছের প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির জন্য এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। হ্রদে ডিম ছাড়ার মৌসুমে মাছের আহরণ ও বিপণনের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) মধ্যরাত ১২টা থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে সকল প্রকার মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। নিষেধাজ্ঞাকালে স্থানীয় বরফ কল বন্ধ থাকবে। এই সময়ে হ্রদে মাছ আহরণের ওপর নির্ভরশীল জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য সহায়তা দেয়া হবে। পাশাপাশি স্থানীয় ও কাপ্তাই হ্রদ মনিটরিং করা হবে।
রাঙ্গামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান জানান, কাপ্তাই হ্রদে কার্প ও রুই জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন ও সুষম বংশবৃদ্ধির লক্ষ্যে তিন মাস মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাকালে মাছ আহরণের ওপর নির্ভরশীল জেলেদের বিশেষ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া অবৈধ উপায়ে মাছ আহরণ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পাশাপাশি কাপ্তাই হ্রদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নৌ-পুলিশ মোতায়েন করা হবে। হ্রদে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকারের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত এই তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রজনন ও অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষম বৃদ্ধি নিশ্চিত করাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। নিষেধাজ্ঞা শেষে শুরু হয় মাছ আহরণের নতুন মৌসুম, যা শেষ হয় পরবর্তী বছরের এপ্রিলে। মূলত প্রতি মৌসুমে নয় মাসই মাছ আহরণ করা হয়ে থাকে কাপ্তাই হ্রদে। রাঙ্গামাটির আট উপজেলা ও খাগড়াছড়ির দুই উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত এ কাপ্তাই হ্রদে সরকারি হিসাবে প্রায় ২৫ হাজার নিবন্ধিত জেলে পরিবার মাছ ধরাসহ সংশ্লিষ্ট পেশায় জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।