ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ১ম ধাপে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মাত্র ২জন প্রার্থী। গত ২৩ এপ্রিল প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের মধ্য দিয়ে ব্যাপকভাবে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হয়েছে। একদিকে সাধারণ জনগনের প্রার্থী হিসাবে মাঠে রয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ¦ পারভেজ কবীর এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যের প্রার্থী হিসাবে বিরামপুর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্যবসায়ী আলহাজ¦ হাফেজ মতিউর রহমান। ৮ মে নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে ব্যপক প্রচারণায় নেমেছেন আলহাজ¦ হাফেজ মোঃ মতিউর রহমান। বাজারে, চা’য়ের দোকানে যত্রতত্র আলোচনা-সমালোচনায় এমপি’র প্রার্থী হিসাবে মতিউর রহমান এর নাম শোনা যাচ্ছে। গত রমজান মাসের একক ইফতার মাহফিলে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক হাফেজ মতিউর রহমানকে তাঁর প্রার্থী হিসাবে পরিচয় করে দেন।প্রায় ২/৩ মাস আগে থেকে এমপি’র প্রার্থী হিসাবে একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও শেষ পর্যন্ত মতিউর রহমান প্রার্থী হিসাবে চুড়ান্ত হয়েছেন। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে এবারে বিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও বিরামপুর আ.লীগের ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ¦ পারভেজ কবীরের সাথে ঘোড়া প্রতীকের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন।
বিরামপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও আ.লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ খায়রুল আলম রাজু এবারে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন না। নানা কারণে তাকে নিয়ে এলাকায় চলছে জল্পনা-কল্পনা। গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনীত প্রার্থী পারভেজ কবীরের সাথে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দিতা করে বিজয়ী হন। তার বিজয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্যের মদদ ছিল বলে গুঞ্জন রয়েছে। এছাড়াও সংসদ সদস্যের সাথে তার দহরম-মহরম ছিল লক্ষনীয়। এবারের নির্বাচনে সংসদ সদস্যের সমর্থন না থাকায় তিনি অংশগ্রহণ করছেন না বলেও অনেকে মনে করছেন। তবে কি কারণে তাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা নিয়েও চলছে নানা গুঞ্জন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এই ২জন চেয়ারম্যান প্রার্থীকে নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। জামায়াত সমর্থিত ডঃ এনামুল হক চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র উঠালেও শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল আলম রাজু বলেন, “ব্যাক্তিগত কারণে এবারের নির্বাচনে আমি অংশগ্রহণ না করলেও উপজেলাবাসীর কল্যাণের চিন্তা করে আলহাজ¦ পারভেজ কবীর ভাইকে আমি সমর্থন করেছি। তিনি একজন সদাশয় ও ভাল মনের মানুষ। আদর্শগত দিক থেকেও তিনি সকলের উদ্ধের্¦। তিনি চেয়ারম্যান হলে বিরামপুর উপজেলা বাসীর কল্যাণ হবে।”
এবারের বিরামপুর উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ২ জন, ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে ৫ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা) পদে ৪ জন প্রার্থী প্রৎিদ্বন্দিতা করছেন। বিরামপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিরামপুর উপজেলায় মোট ভোটার ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪৭ জন। এর মধ্যে পুুরুষ ভোটার ৭৪ হাজার ৫৪৮ আর নারী ভোটার ৭৪ হাজার ৭৯৫ জন। হিজড়া ভোটার রয়েছেন মাত্র ৪ জন। ৮ মে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উপজেলারর রতনপুর গ্রামের ভোটার হোসেন আলী জানান,“প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য আমরা ভোট দিতে পারছি। এমপি সাহেবকেও আমরা ভোট দিয়েছি। যে যাই বলুক, এবারে আমরা আমাদের পছন্দের প্রার্থীকেই বেছে নিব ইনশাআল্লাহ।”
বিএনপি-জামায়াত সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় গত সংসদ নির্বাচনের ন্যায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ক্ষমতাসীন আ.লীগ সরকার ডামি প্রার্থীর আদলে অংশগ্রহনমুলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য দলীয় মনোনয়ন না দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে। তবে উপজেলা পরিষদের উপদেষ্টা হিসাবে সংসদ সদস্য এমপি রাজত্ব কায়েমের উদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাচনে তাঁর প্রার্থীকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে সবরকম চেষ্টা করছেন বলে অভিজ্ঞজনেরা মত পোষন করেছেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক বলেন “আসন্ন উপজেলা নির্বাচন যথারীিিত অংশগ্রহনুলক এবং সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে আমার কোন প্রার্থী নাই। জাতির জনকের কন্যার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে। ভোটারেরা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিয়ে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী করে নিবেন।”
বিরামপুর উপজেলার বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও দিনাজপুর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুজ্জামান মিতা বলেন,“অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে দলীয় প্রার্থী দেয়ার কোন সিদ্ভান্ত না থাকায় বিরামপুর উপজেলাপরিষদ নির্বাচনে আ.লীগের কোন প্রার্থী নাই।স্থানীয় জনগণ তাদের অবাদ ভোট প্রদানের মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিকেই চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত করবেন।”