নওগাঁর পত্নীতলাসহ আশেপাশের উপজেলায় সজনের চাহিদা ও চাষ দিন দিন বাড়ছে। ‘সুপার ফুড’ নামে খ্যাত এই সবজির ব্যাপক চাহিদা ও বাজারে ভালো দাম থাকায় চাষিরা সজনে চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। শুধু বাড়ির আশে-পাশেই নয় রাস্তার পাশের ফাঁকা জমিতে চাষিরা দেদারছে রোপন করছেন সজনে গাছের চারা। মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সজনে ডাটা ও সজনে পাতার ভালো চাহিদা ও দাম থাকায় এবং কোন উৎপাদন খরচ না থাকায় কৃষকরা সজনে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। আর এ কারণে আগামীতে পত্নীতলায় ব্যাপকভাবে সজনে উৎপাদনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, সজনে ডাটা ও সজনে পাতার রয়েছে হরেকরকম পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা। সজনে পাতায় থাকা ভিটামিন ‘সি’ অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। ঠান্ডা ও সর্দি-কাশিতে সজনের তরকারি বা স্যুপ জ্বর ও কাশি উপশমে ভালো কাজ করে। সজনে ডাটা কোলেষ্টরল নিয়ন্ত্রণ ও সজনে পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভালো কাজ করে। পেটের সমস্যা সমাধান ও ডায়াবেটিকস নিয়ন্ত্রনে সজনে বেশ উপকারি। সজনে ডাঁটায় থাকা আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন হাড় গঠন ও রক্ত বিশুদ্ধ করে। সজনে ডাটার তরকারি খেলে কোষ্টকাঠিন্য দুর, শ্বাসকষ্ট রোধ, অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে। ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ সজনে পাতা খেলে শরীরের ব্যথা ও ক্লান্তি দূর হয়। মুখের রুচি ফিরিয়ে আনতে ও শরীরের শক্তি বাড়াতে সজনে পাতার ভর্তা ও ভাজির কোন জুড়ি নেই। সজনে ডাটা লিভার ও কিডনি সুরক্ষিত রাখে এবং শরীরের বাড়িতে ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও সজনে ডাঁটা ও সজনে পাতার রয়েছে নানা উপকারিতা।
সরেজমিনে পত্নীতলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামের সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ির আশেপাশের ফাঁকা জায়গা ও রাস্তার পাশে সজনের ডাল রোপণ করেছেন। এমনকি নওগাঁ-পত্নীতলা ও পত্নীতলা-বদলগাছী আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানেও তাঁরা সজনের চারা রোপন করে রেখেছেন। পার্বতীপুর গ্রামের সাবু, ফহিমপুর গ্রামের সাদেকসহ কয়েকজন কৃষকের সাথে এ বিষয়ে কথা বললে তাঁরা জানান, সজনে সাধারণত পানি জমে না এমন উঁচু জায়গায় ভালো হয়। এটা চাষের কোন উৎপাদন খরচ নেই। ডাল কেটে মাটিতে পুঁতে রাথলেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ডালে নতুন কুশি জন্মায়। গাছ বড় না হওয়া পর্যন্ত সামান্য পরিচর্যা করতে হয়। গাছ লাগানোর ২/৩ বছরের মধ্যে সজনে ধরতে শুরু করে। ফল সংগ্রহের পর এর ডালপালা ছেঁটে দিতে হয়। এতে পরের বছর ভালো ফলেন সম্ভাবনা থাকে। এখন সজনের শেষ সময়। গাছের যে ডালপালা ঝেঁটে ফেলা হচ্ছে সেগুলো নষ্ট না করে তাঁরা রাস্তার পাশে রোপন করছেন। এতে আগামীতে এলাকায় সজনের উৎপাদন আরো বাড়বে বলেও তাঁরা মতদেন।