পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের ১০কোটি টাকা গরমিলের ঘটনায় এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপকসহ আটক ৩ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার (২৭ এপ্রিল)এই তথ্য জানা গেছে। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) মধ্যরাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত শুক্রবার(২৬এপ্রিল) সাঁথিয়া থানা থেকে তাঁদের আদালতে পাঠালে ওই ৩ ব্যাংক কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন পাবনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর।
কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, গত শুক্রবার(২৬এপ্রিল)বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে তাঁদের আদালতে পাঠালে ওই ৩ ব্যাংক কর্মকর্তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
টাকা গরমিলের বিষয়ে ব্যাংক বন্ধ থাকায় কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে মুল কারণ জানা যাবে। তবে এলাকাবাসীর মুখে শুনা যাচ্ছে ওই ব্যাংক কর্মকর্তারা গোপনে ব্যবসায়িদের ঋণ দিয়েছেন যা সময়মত রিকভারি করতে পারেনি।এমনকি কোন কোন ব্যবসায়িকে তাঁরা কোটি কোটি টাকা সিসি লোন দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, ওই ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যাংকের তরল টাকা বা সংরক্ষিত টাকা থেকে গোপনে স্থানীয় ভূমি ব্যবসায়িদের ডকুমেন্ট বা নথি ছাড়াই লাখ লাখ টাকা দেন। বিনিময়ে তাঁরা কমিশন বা শেয়ারের লভ্যাংশ ভোগ করেন। সে কারণে হয়তো ব্যাংক হিসাবের সাথে সংরক্ষিত টাকার গরমিল হয়েছে।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্য বিশিষ্ট অডিট দল সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে যান। অডিটে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম ধরা পড়ে।
এ বিষয়ে ওই শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দেন অডিট দল। পরে পুলিশ ওই দিন মধ্যরাতে তাদের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে।
সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)আনোয়ার হোসেন জানান,আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পাবনা আদালতে পাঠানো হয়েছে। টাকা গরমিলের বিষয়ে কোন কিছু জানা যায়নি। এটা দুদকের ব্যাপারে। তারা তদন্ত করে মূল কারণ বের করবেন এবং আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।