পিরোজপুরে এক কলেজ ছাত্র হত্যার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত, মামলার আসামীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেছেন নিহতের মা। শুক্রবার রাত ৮ টায় পিরোজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নিহত সৈয়দ রাসেল মীর এর মা জাহানারা বেগম এ দাবী জানান। নিহতের মা জাহানারা মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাসেলের ছোটবোন রেশমা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম বায়জীদ হোসেন তার ছেলে কলেজ ছাত্র রাসেলকে গত ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে তার লোকজনকে দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে। ওই দিন বেলা ১১টার দিকে রাসেল বায়েজিদের সাথে তার বাড়ীতে দেখা করে কথাবার্তা বলে বের হয়ে মোটর সাইকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে স্থানীয় কদমতলা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বায়েজিদের লোকজন ধারালো অস্ত্র ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। স্থানীয়া গুরুতর অবস্থায় রাসেলকে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ওইদিন রাত ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
লিখিত বক্তব্যে তিনি অভিযোগ করেন, তারা যখন খুলনায় রাসেলের লাশের সুরতহাল ও পোস্টমর্টেম নিয়ে ব্যস্ত তখন চেয়ারম্যান প্রার্থী বায়জীদ তাদের বাড়িতে গিয়ে তার মেয়েকে দিয়ে জোড় পুর্বক মুল আসামীদের নাম বাদ দিয়ে একটি এজাহার তৈরি করে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করায়। মামলার এজাহার সঠিক না হওয়ায় তারা পুনরায় থানায় মামলা দিতে গেলে থানা মামলা নিতে টালবাহনা করে। তখন নিহতের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে ২৯ এপ্রিল এস এম বায়জীদ হোসেনকে প্রধান আসামি করে ১১ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৩/৪ জনকে আসামি করে পিরোজপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আরজিতে বাদী অভিযোগ করেনে ১ নম্বর আসামি উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এস এম বায়জীদ এর নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা তার একমাত্র পুত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেন প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা এবং বায়েজিদ ক্ষমতাধর হওয়ায় তারা এ হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন। তাই সাংাবদিকদের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও অবিলম্বে বিচারের দাবী জানাচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন বায়জিদের বিরুদ্ধে এ হত্যা মামলাসহ ডজনখানেক মামলা থাকলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছেনা।
এ বিষয়ে পিরোজপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসিকুজ্জামান বলেন, উপজেলার চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ মো. বায়জীদ হোসেনের বিরুদ্ধে একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল, সেটির চার্জশিট হয়ে গেছে। কিন্তু চার্জশিটে তার নাম নেই। এ ছাড়া অন্যান্য মামলায় তিনি জামিনে আছেন। এ বিষয়ে শেখ মো. বায়জীদ হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।