এশিয়ার বৃহত্তম কৃত্রিম কাপ্তাই হ্রদ ড্রেজিং এর মাধ্যমে নাব্যতা ফিরিয়ে এনে কাপ্তাই হ্রদের মাছের সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমান এমপি। তিনি বলেন, কাপ্তাই হ্রদের ড্রেজিংএর বিষয়ে পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সাথে সমন্বয় করে আগামী কিছু দিনের মধ্যে এই কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শনিবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ১১টায় দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহৎ ৭৩৫বর্গ কিলোমিটার আয়তনের কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত ও মৎস্যজীবীদের মাঝে ভিজিএফ কার্ড বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রহমান এমপি এসব কথা বলেন।
মাছের পোনা অবমুক্ত ও জেলেদের মাঝে বিতরণের আগে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য ও বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষযক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার এমপি, বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক মো: জুলফিকার আলী, নৌ পুলিশর অতিরিক্ত আইজি মোহাঃ আবদুল আলীম মাহমুদ বিপিএম, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন রাঙ্গামাটির ব্যবস্থাপক কমান্ডার আশরাফুল আলম ভুঁইয়া।
মৎস্য মন্ত্রী বলেন, কাপ্তাই হ্রদ নিয়ে পুরো বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশা ভিন্ন রকম। সেই অবস্থায় কাপ্তাই হ্রদের যে অবস্থা থাকার কথা ছিল সেই আবস্থায় কাপ্তাই হ্রদ নেই। তাই এটিকে পুনরুদ্ধার করা আমাদের প্রধান কাজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কাপ্তাই হ্রদের অবস্থান সম্পর্কে জানানো হবে। কিভাবে এই কাপ্তাই হ্রদকে পুনরুদ্ধার, পুনজীবন বা হ্রদের সোনালী অতীত কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় তার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মৎস্য মন্ত্রী আরো বলেন, আপাতত আমাদের দৃষ্টিতে যেটি মনে হয়েছে কাপ্তাই হ্রদের নাব্যতা কমে গেছে। এই নাব্যতা কিভাবে ফিরিয়ে আনা যায় সেই দিকে আমাদের প্রথমেই জোর দিতে হবে। পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়, নৌ পরিবহন মন্ত্রনালয় ও মৎস্য ও প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয় এই তিনটি মন্ত্রনালয় এই হ্রদের সাথে জড়িত রয়েছে সকলে মিলি সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই হ্রদের উন্নয়ন করা হবে। এর আগে কাপ্তাই হ্রদের ক্ষতিকর যে সকল বিষয় রয়েছে কাপ্তাই হ্রদের মা মাছ নিধন বন্ধ করা, ছোট মাছ আহরণ না করা, কাপ্তাই হ্রদে জাঁক বন্ধ করাসহ সকল বিষয়ে রাঙ্গামাটির সকল মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন মন্ত্রী।
কাপ্তাই হ্রদে মাঝে বংশবৃদ্ধি ও মাঝের উৎপাদন বাড়াতে এবছর ৬৫ মে. টন মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে। একই সাথে প্রায় ২৭ হাজার জেলেকে ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হবে। মাছ ধরা বন্ধের তিন মাস একটি কার্ডের বিপরীতে ২০ কেজি চাল পাবে মৎস্যজীবীরা।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর কার্প জাতীয় মাছের প্রকৃতিক প্রজনন, বংশ বৃদ্ধির জন্য কাপ্তাই হ্রদে ৩ মাস মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকে। এ বছর কাপ্তাই হ্রদ হতে ১৮ হাজের মৎস্য আহরনের বিপরীতে ১৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।