পূর্ব সুন্দরবনে লাগা আগুন রাতে ছড়িয়ে পড়েছে বিশাল এলাকা জুড়ে। ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও বন বিভাগের সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের সাথে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনী। রোববার (৫মে) সকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার বনের আগুন জ্বলতে থাকা এলাকার আগুন লাগার স্থানে পানি দিয়ে সহযোগিতা করছে। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি অনুসন্ধানে পুর্ব সুন্দরবনের চাদপাই রেঞ্জেরে রেঞ্জ কর্মকর্তা রানা দেবকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মুহাঃ খালিদ হোসেন ও পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত খান।
শুরুতে নৌ বাহিনীর মোংলা ঘাটির কমান্ডার লেফটেনেন্ট আরাফাতুল আরেফিনের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি ফায়ার ফাইটিং টিম আগুন নেভানোর কাজে অংশ নিয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে ৩শ স্বেচ্ছাসেবক আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপণ্ডপরিচালক মামুন মাহমুদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ তদারকি করছেন।
ফায়ার সাভির্স ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাট এর উপপরিচালক মামসুন আহম্মেদ জানান, জেলার ফায়ার সার্ভিস এর ৫টি ইউনিট সুন্দরবনে আগুন জ্বলতে থাকা এলাকায় নেওয়া হয়েছে। তবে ৩টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে। ২টি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। তবে ভোলা নদী অনেক দুরে হওয়ায় পানি সংকটে আগুন নেভাতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি জানান, কতটুকু এলাকা আগুন ছড়িয়ে পড়েছে তা নিধারণ করা যাচ্ছে না। প্রচন্ড রোদের তাপদাহে বনের মধ্যে শুকনো গাছ আর পাতা পড়ে থাকার কারণে আস্তে আস্তে ভয়াবহ আকার ধারন করছে।
বন সংলগ্ন মোড়েলগঞ্জের নিশান বাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জানান, সুন্দরবনের লতিফের ছিলা এলাকার অনেক জায়গা জুড়ে আগুন লেগেছে। অন্তত ৫০টি জায়গায় আগুন জ্বলছে বলে দৃশ্যমান হয়েছে। তিনি আরো বলেন তার নেতৃত্বে ৩শ স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ করছে।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নুরুল করিম জানান, শনিবার(৪ মে) নানা প্রতিকুল অবস্থার কারণে আগুন নেভানোর কাজ পুরোপুরি শুরু করা যায়নি। রোববার আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে বন বিভাগের সাথে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, বাংলাদেশ কোস্টগাড এর ফায়ার ফাইটার ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগ দিয়েছে। তবে কত টুকু এলাকা জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে এ বিষয়ে তিনি কিছু জানাতে পারেনি। এদিকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি অনুসন্ধানে পুর্ব সুন্দরবনের চাদপাই রেঞ্জেরে রেঞ্জ কর্মকর্তা রানা দেবকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন, ধানসাগর স্টেশন অফিসার রবিউল ইসলাম ও জিউধরা স্টেশন অফিসার ওবাদুর রহমান। সাত দিনের মধ্য রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলা হয়েছে।
শনিবার (৪ মে) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমুরবুনিয়া টহল ফাঁড়ি সংলগ্ন গহিন বনে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর ২২ ঘন্টা অতিবাহিত হতে চল্লেও আগুন নিয়ন্ত্রনে আসেনি।