ঝিনাইদহের শৈলকুপায় সাংবাদিক মফিজুল ইসলামের উপর হামলার ঘটনায় শৈলকুপা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ-মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে অবিলম্বে হামলাকারী দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার দাবি জানানো হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে হামলাকারী দুর্বৃত্তচক্রদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা না হলে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি সহ সাংবাদিকরা কালোব্যাজ ধারণ, কলম বিরতি, অনশন ও থানা পুলিশের সমস্ত ইতিবাচক সংবাদ বয়কটের হুঁশিয়ারী দিয়েছেন। মানববন্ধন ও বিক্ষোভে শৈলকুপা প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহিন আক্তার পলাশ, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান মিল্টন সহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। দৈনিক লোকসমাজ ও নয়াদিগন্ত পত্রিকার সাংবাদিক প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী পরিষদের সিনিয়র সদস্য মফিজুলের উপর দুর্বৃত্তদের হামলার প্রতিবাদে দুপুরে কর্মসূচি শুরু হয়। শৈলকুপার কবিরপুরে প্রেসক্লাব ভবনের সামনের সড়কে ক্ষুব্ধ সাংবাদিকরা জড়ো হতে থাকে। তারা ব্যানার হাতে পূর্ব ঘোষিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেয়। এ সময় প্রেসক্লাব সভাপতি আমাদের সময় পত্রিকার শাহিন আক্তার পলাশ, সাধারণ সম্পাদক প্রতিদিনের বাংলাদেশ’র আবদুর রহমান মিল্টন,প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি গ্রামের কাগজ’র এম. হাসান মুসা, সমকাল পত্রিকার তাজনুর রহমান ডাবলু, দৈনিক ইনকিলাব’র শিহাব মল্লিক,মানবজমিন’র ওয়ালিউল্লাহ ওলি, স্পন্দন পত্রিকার মাসুদুজ্জামান লিটন, সাপ্তাহিক ডাকুয়া’র শামীম বিন সাত্তার, স্বদেশ বিচিত্রার এনায়েত হোসেন, আমার বার্তা পত্রিকার শহিদুজ্জামান বাবু, আমার সংবাদ’র আবদুল জব্বার, মানবকণ্ঠ’র এম বুরহান উদ্দীন, আমাদের নতুন সময়’র আলীমুজ্জামান আলিম, খবরপত্র’র চঞ্চল মাহমুদ, এই আমার দেশ’র স¤্রাট হোসেন, প্রতিদিনের কন্ঠ’র মেহেদী হাসান মিঠু, সাংবাদিক তুহিন জোয়ার্দ্দার সহ অন্যান্য সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মানববন্ধনে একাত্মতা প্রকাশ করে ঝিনাইদহ জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি এম.এ কবির অংশগ্রহণ করে। প্রসঙ্গত, পেশাগত কাজে গত ৪মে (শনিবার) দিবাগত রাতে শৈলকুপার লাঙ্গলবাঁধ যাওয়ার পথে বন্দেখালী এলাকা থেকে সাংবাদিক মফিজুল ইসলামের গতিরোধ করে একদল চিহ্নিত দুর্বৃত্ত অতর্কিতে তার উপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা ধারালো অস্ত্র সহ লাঠি-সোটা দিয়ে বে-ধড়ক মারপিট ও নির্যাতন চালায়। সাংবাদিক মফিজুল মাথা, চোখ, নাক,কানসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুত্বর আঘাতপ্রাপ্ত হন। এ সময় সাংবাদিকের মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে লাঙ্গলবাধ ক্লিনিকে চিকিৎসা দিয়ে লাঙ্গলবাঁধ পুলিশ ক্যাম্পে নিরাপদে রাখে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সাংবাদিক মফিজুল কে পুলিশ বাড়ি পৌঁছে দেয়, এরপর তিনি শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন ও থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার তদন্ত ও এজাহার গ্রহণ সহ হামলাকারীদের মধ্যে চিহ্নিত দুর্বৃত্ত মোফাজ্জল হোসেন ওরফে মোফা কে রোববার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করেছে। এখনো ৪ আসামীর মধ্যে পারভেজ মুন্সি, কাঞ্চন মন্ডল ও লাভলু শেখ এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। মামলায় আরো অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। সাংবাদিক মফিজুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন হামলাকারীরা হুমকি অব্যহত রেখেছে, এতে পরিবার সহ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। সাংবাদিক মফিজুল ইসলামের উপর হামলা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শৈলকুপা থানার এসআই লালটুর রহমান বলেন, সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় এরইমধ্যে মোফাজ্জেল হোসেন ওরফে মোফা নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুতই সকল আসামিদের গ্রেপ্তার ও আইনের আওতায় আনা হবে।