তীব্র তাপপ্রবাহে পুড়ছে সারা দেশ। দিন দিন তাপমাত্রার পারদ ওপরের দিকে উঠছে। গরম ও অস্বস্তিতে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। চারদিকে বৃষ্টির দেখা নেই। নদী-খাল-জলাশয় শুকিয়ে মাঠে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে; গাছপালা, উদ্ভিদ ও তৃণলতা জীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এই গরমে স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনা করে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছে। গরমের তীব্রতা থেকে বাঁচতে দেশব্যাপী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে চলছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। গরম থেকে গাছই যখন রক্ষা করে, ঠিক এমন সময় ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৪০০ গাছ কাঁটার প্রস্তুতি নিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রশাসন। সারা বিশ্বে জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অংশ হিসেবে বাদ নেই আমরাও। বাংলাদেশে মনুষ্যসৃষ্ট কারণ যেমন: গাছপালা কেটে ফেলা, বন উজাড় করা, গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ অনেক বেড়ে যাওয়া, অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলাশয় ভরাটের কারণে দিন দিন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। কিন্তু এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের এমন সিদ্ধান্ত অবাক করার মতো। সরেজমিনে দেখা যায়, চারুকলা অনুষদের ভবন, গাণিতিক ও পদার্থবিদ্যা বিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন ও জীববিজ্ঞান অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণের জন্য টিনের ঘেরাও দিয়েছে প্রশাসন। চারুকলা অনুষদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আল-বেরুনি হলের বর্ধিতাংশের জায়গা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই জায়গাগুলোয় ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৪০০ গাছ কাঁটার বন্দোবস্ত করেছে। পাশাপাশি চারুকলা ভবনের জন্য বরাদ্দ করা জায়গা অতিথি পাখির ‘ফ্লাইং জোন’ হিসেবে পরিচিত। দেশের গরমের এই পরিস্থিতিতে কোনো ধরনের মহাপরিকল্পনা ছাড়া এতগুলো গাছ কাঁটার সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশীজনরা। এভাবে গাছপালা কমতে থাকলে জীববৈচিত্র্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাপদাহে ভবিষ্যতে আরো খারাপ পরিস্থিতি স্বীকার হওয়ার আগেই সরকারকে সচেতন হতে হবে। বৃক্ষনিধনের মত জঘন্য কাজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দেশকে রক্ষা করতে গাছের প্রতি যত্ন নিন।