নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসার শ্রেণী কক্ষে ঢুকে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীকে ইভটিজিং এর সময় প্রতিবাদ করায় মাদ্রাসার শিক্ষকের ওপর হামলা চালিয়েছে কিশোর গ্যাং। এতে শিক্ষকের দুই হাত ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক এর শশুর বাদী হয়ে ২জনকে আসামি করে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে।
জানা যায়, রোববার সন্ধ্যায় উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের মদিনা বাজারের সংলগ্ন এ হামলার ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম মোঃ হাসান (৩৬)। তিনি মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার শিক্ষক। এর আগে একই দিন দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের জামেয়া শরাফতিয়া ইসলামিয়া ফাযিল মাদ্রাসার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করার সময় প্রতিবাদ করে শিক্ষক মোঃ হাসান। হামলাকারী মোঃ রাজু (২২) জামেয়া শরাফতিয়া ফাযিল মাদ্রাসা এলাকার বাসিন্দা ও আবু নোমান (২০) ওই মাদ্রাসার ছাত্র।
জামেয়া শরাফতিয়া আবরী বিভাগের প্রভাষক মোঃ শহিদ উল্যাহ অভিযোগ করে বলেন, বেলা ১২টার দিকে বহিরাগত মাদ্রাসা ক্যাম্পাসে আসে। এরপর সেই মাদ্রাসার ছাত্র নোমানের সহযোগিতায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীর কক্ষে ঢুকে এক ছাত্রীকে ইভটিজিং করে। ইভটিজিং এর শিকার ছাত্রী সহপাঠিরা বাধা দিলেও রাজু ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। এক পর্যায়ে মাদ্রাসার নুরানী বিভাগে শিক্ষক মোঃ সোহেল প্রতিবাদ করতে করতে এগিয়ে এলে রাজু ও তার সহযোগীরা মাদ্রাসার ভিতরে ওই শিক্ষক কে মারধর করে। তিনি আরও জানান, এরপর মাদ্রাসার শিক্ষক মোঃ হাসান এগিয়ে এসে প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদের ফলে শিক্ষক ও ইভটিজারের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
এ বিরোধের জের ধরে রোববার সন্ধ্যা ৭টায় শিক্ষক হাসান মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে কিশোর গ্যাং এর নেতা রাজু ও নোমানের নেতৃত্বে তার গরিরোধ করে। পরে লাঠিসোটা ও হকিস্টিক দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে। আঘাতে তার ২হাত ভেঙ্গে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে মারত্মক জখম হয়। গরুত্বর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নোয়াখালীর জাফান বাংলাদেশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জাফান হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের ডাক্তার আবদুর রহমান তার একটি হাত অপারেশ করে পাত বসানো হয়েছে। অন্য একটি হাত প্লাস্টার করা হয়েছে। তার ২টি হাতেই ভেঙ্গে গেছে।
এব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী বলেন, হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে রাজু ও নোমানকে আসামি করে কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন ভূক্তভোগীর শ্বশুর। আসামীদের গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি চলছে।