দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ুয়া নয়বছর বয়সের শিশু কন্যা তামান্না আক্তারকে একাধিকবার ধর্ষণের পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার অভিযোগে আদালতের মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যার পর সিঁড়ি কোঠায় শিশু তামান্নার লাশ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার কথা রটিয়ে দেওয়া হয়।
নিহত তামান্না বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর গ্রামের আমির হোসেন ফকিরের মেয়ে ও আগরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেনীর ছাত্রী ছিলো। নিহত শিশুর মা তানজিলা বেগম বাদি হয়ে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছেন। বিচারক মোঃ ইয়ারব হোসেন মামলায় আনা অভিযোগ তদন্ত করে উজিরপুর মডেল থানার ওসিকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।
বুধবার সকালে আদালতে দায়ের করা মামলার এজাহারে জানা গেছে, চাঞ্চল্যকর এ মামলার আসামিরা হলো-উজিরপুর পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মাদারশী এলাকার বাসিন্দা তাওহীদ হাওলাদার, তার বাবা সুলতান হাওলাদার, মা নাজনিন বেগম, বোন সুমি ও শিমু আক্তার।
মামলার এজাহারে বাদি উল্লেখ করেন, আসামি নাজনিন বেগম তার ফুফাতো বোন। গত ১ মে ফুফাতো বোনের মেয়ে সুমি ও শিমু আক্তার তাদের বাড়ি বেড়াতে আসে। পরেরদিন ২ মে তামান্নাকে নিয়ে তাদের বাড়ি যায়। গত ৩ মে তাওহীদ হাওলাদার নিজ ঘরে তামান্নাকে একা পেয়ে জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষন করে। পরে অন্যান্য আসামিরা এসে বিষয়টি জানতে পেরে তামান্নাকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। একপর্যায়ে বিষয়টি এলাকাবাসী জানার পূর্বে তামান্নার গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়। এরপর সিঁড়ি কোঠার আড়ার উঁচুস্থানে শিশু তামান্নার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়। ওইদিন (৩ মে) সুলতান হাওলাদারের ঘরের সিঁড়ি কোঠা থেকে শিশু তামান্নার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় উজিরপুর মডেল থানায় অপমৃত্যু মামলা দায়েরের পর তামান্নার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।
বুধবার সকালে নিহত শিশুর মা তানজিলা বেগম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, তামান্নার মৃত্যুর পর বিষয়টি ধাপাচাঁপা দিতে সুলতান হাওলাদার ও তার পরিবারের লোকজনে বিভিন্নধরনের প্রলোভন দেখায়। ফলে তামান্নাকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের সন্দেহ হয়। এরপর থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। যেকারণে গত ৭ মে আদালতে ন্যায় বিচার প্রার্থনা করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সুলতান হাওলাদার ও তার পরিবারের সদস্যরা গত দুইদিন থেকে আত্মগোপনে থাকায় ও তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার বন্ধ থাকায় কোন বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।