চাঁদপুর মতলব উত্তরের মোহনপুরের বাসিন্দা জামাল মোল্লার ৭ সন্তান। তার সন্তানরা কয়েক মাস আগে চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনে খোলা আকাশের নিচে তাকে রেখে চলে যায়। এরপর সেখানেই অর্ধাহারে অনাহারে বিনা চিকিৎসায় ও তীব্র গরমে কষ্টের মধ্য দিয়ে মারা যান বৃদ্ধা জামাল মোল্লা।
বুধবার (৮ মে) দুপুরে রেলওয়ে থানার ওসি মো. মাসুদ আলম তার দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে শনিবার (৪ মে) রাত ১টায় রেলওয়ে কোর্ট স্টেশনে মারা যান জামাল মোল্লা।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে কোর্ট স্টেশনে অবস্থানকালে জামাল মোল্লা নিজের নাম ও পরিবারের বিভিন্ন তথ্য জানিয়ে ছিলেন। তার আনুমানিক বয়স হবে ৮০ বছর। তিনি চাঁদপুরের মতলব উত্তরের মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা। এখানে তার সন্তানরা তাকে এখানে রেখে চলে গিয়েছিল।
তারা আরও জানান, তার পাঁচ মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। তাদের বিয়ে দিয়েছেন তিনি। একসময় তিনি মোহনপুরে ভালো ব্যবসায়ী ছিলেন এবং ছেলেদের নিয়ে সে ব্যবসা পরিচালনা করতেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সেই ছেলে-মেয়েরাই তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে বাড়ি, ঘরসহ সকল সম্পত্তি লিখে নিয়ে তাকে ফেলে রেখে যায়। তার স্ত্রী আছে কি না তা জানতে চাইলে কোনো কিছু না বলে তিনি সবসময় শুধু চুপ করে সবার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতেন।
চাঁদপুর রেলওয়ে থানার ওসি মো. মাসুদ আলম বলেন, মরার পরেও তিন দিন বৃদ্ধার স্বজনদের খোঁজ পাইনি। পরে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে তাকে দাফন করল আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম সংস্থা। ওনার মৃত্যুর বিষয়ে রেলওয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
এদিকে, জামাল মোল্লার ন্যায় আরেকজন বৃদ্ধ চাঁদপুর রেলওয়ে কোর্টস্টেশন প্ল্যাটফর্মের এদিক ওদিক গড়াগড়ি করছে। স্বজন বলতে কেউই খোঁজ নিচ্ছে না তার। ওই বৃদ্ধের দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে পানি ছিটিয়ে তাড়ানো হচ্ছে। পথচারীরা তা চেয়ে চেয়ে দেখছে। কেউ উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। অনেক মানুষের জীবন এভাবেই রাস্তায় গড়াগড়ি করছে।