কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটের ফলাফলে কারচুপির অভিযোগে ফল প্রত্যাখ্যান করে পুনঃগণনার দাবি জানিয়েছেন পরাজিত মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম রেনু।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে উপজেলা সদর ঈদগাহে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, ৮ মে বুধবার অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমার মোটর সাইকেল প্রতীক বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছে। কিন্তু আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এমদাদুল হক জুটন (আনারস) নির্বাচনি কর্মকর্তাদের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে আমার মোটর সাইকেল প্রতীকের বিজয়কে ছিনিয়ে নিয়েছেন। আমাকে মাত্র ৯৪৭ ভোটে পরাজিত দেখানো হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচনের দিন দুপুরের পর প্রতিদ্ধন্দ্বী প্রার্থী এমদাদুল হক জুটন তাঁর নিজ এলাকার পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের বিশুহাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, কলাদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র ও চকদিগা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেয়। পরে তারা জাল ভোট প্রয়োগ করে। এসব কেন্দ্রে শতকরা ৭০ ভাগ ভোট কাস্ট দেখানো হয়েছে। বিষয়টি আমি মুঠোফোনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে একাধিকবার জানালেও তিনি এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেন নি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সন্ধ্যায় ভোটের ফলাফল ঘোষনার সময় সুকৌশলে আমার ভোট কম দেখিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এমদাদুল হক জুটনকে ৯৪৭ ভোটে জয়ী ঘোষনা করা হয়। ভোট পুনঃগণনা করলে আমি অবশ্যই জয়ী হবো। তিনি আরও বলেন, ভাইস চেয়ারম্যানদের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হলো ৭৫ হাজার ৪১৬ ভোট। অপরদিকে চেয়ারম্যানদের মোট প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা দেখানো হয়েছে ৭০ হাজার ৩৩৪ ভোট। এই ৫ হাজার ৮২ ভোট কম দেখিয়ে আমাকে পরাজিত করা হয়েছে। চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের ভোটের যোগ ফলে ব্যাপক গড়মিল রয়েছে। তিনি প্রশ্ন করে বলেন, এই অতিরিক্ত ভোটগুলো গেল কোথায় আমি এর জবাব চাই। আমি এই ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এ সময় আগামী দুইদিনের মধ্যে ভোট পুনঃগণনা করে ফলাফল ঘোষনা না করলে তাঁর কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ঘোষনা দেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পাকুন্দিয়া পৌরসভার মেয়র মো. নজরুল ইসলাম আকন্দ, আওয়ামী লীগ নেতা দুলাল মিয়া, রিয়াজ উদ্দীন, কাজল মিয়া, জানু মিয়া, লাল মিয়াসহ শতাধীক নির্বাচনি কর্মী-সমর্থক।
এ বিষয়ে জানতে সহকারি রিটার্নিং অফিসার ও পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (৮ মে) পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে এমদাদুল হক জুটন (আনারস) ২৮ হাজার ৭৩৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্ধন্ধী প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম রেনু (মোটর সাইকেল) ২৭ হাজার ৭৯১ ভোট পান। পরে উপজেলা সহকারি রিটার্নিং অফিসার এমদাদুল হক জুটনকে ৯৪৭ ভোটে বিজয়ী ঘোষনা করেন।