দীর্ঘদিন ধরেই নিত্যপণ্যের দামে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বাজারে সরবারহে খুব একটা ঘাটতি না থাকলেও বেশিরভাগ পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের ব্যবধানেই দাম বেড়ে যাচ্ছে বিভিন্ন সবজির। একই সাথে চড়তে থাকে সব ধরনের মাংস ও ডিমের দামও। মাঝে সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে গরমের দোহাই দিয়েছিল ব্যবসায়ীরা। এখন বৃষ্টি শুরু হলেও দাম তো কমেইনি উল্টো বেড়েছে। কিন্তু এখন দাম বাড়ার কারণের আর কোনো সদুত্তর পাওয়া যায় না ব্যবসায়ীদের কাছে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, দাম বেড়ে গেলে আমাদের বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়। দাম বাড়ানো-কমানো আমাদের হাতে নেই। আমরা কেবলই কিনে এনে কিছু লাভ রেখে বিক্রি করি। অন্যদিকে বাজার করতে আসা ক্রেতারা সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সবজির দাম যেভাবে বাড়ছে, কিনে খাওয়াই কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এদিকে শুধু খুচরা বাজারে নয়, উত্তাপ বেড়েছে পাইকারি বাজারের পণ্যের দামেও। যার প্রভাব দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা ব্যববসায়ীদের। গরমে সবজির চাহিদা বেড়েছে কিন্তু সে অনুপাতে সরবরাহ নেই। এ ছাড়া সবজি দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বাজারে একধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। তাই বেশির ভাগ সবজির দাম বাড়তির দিকে রয়েছে। অন্যদিকে মুরগির দামও গত সপ্তাহের চেয়ে বেশি। বিশেষ করে সোনালী জাতের মুরগির দাম বেশ বেড়েছে। এ মুরগী প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪১০-৪২০ টাকা। যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টাকা বেশি। ব্রয়লার ২২০-২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ফার্মের মুরগির ডিমের দামও বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ১০ টাকা বেড়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার কারণ হিসেবে তাপপ্রবাহে মুরগি মারা যাওয়া, ডিম নষ্ট হওয়া ও সরবরাহের ঘাটতিকে দুষছেন বিক্রেতারা। স্বস্তির খবর নেই মাছের বাজারেও। গরমের উত্তাপ ছড়িয়েছে এখানেও। বেশিরভাগ চাষের ও দেশি মাছের দামই চড়া। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে মাছের সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে। এর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে অধিক হারে মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ না পায়, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি আমদানিকৃত ও দেশজ উৎপাদিত- এ দুধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে সংরক্ষণের অভাবে বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ খাদ্যদ্রব্য নষ্ট হয়। তাই পচনশীল খাদ্যদ্রব্য যথাযথ সংরক্ষণের জন্য উপজেলাভিত্তিক আরও বেশি হিমাগার স্থাপন করতে হবে। তা না হলে স্বল্প আয়ের মানুষের অস্বস্তি দূর হবে না।