সারাদেশের ন্যায় রাঙ্গামাটি জেলার বৃহত্তর উপজেলা বাঘাইছড়ি উপজেলা ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২৯ মে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। প্রচারণা শুরু আগের দিন সোমবার (১৩ মে) বিকল ৪টায় বঙ্গলতলী এলাকার সুকেতন মাঠে গোলাগুলি শুরু হয়ে সন্ধ্যায় বন্ধ হয়।
আর প্রচারণার প্রথম দিনে মঙ্গলবার (১৪ মে) ভোর পৌনে ৬টার দিকে আবারও ৩৫নং বঙ্গলতলি ইউনিয়নের দুলোবনিয়া এলাকায় পাহাড়ের বিবাদমান দুই পক্ষের মধ্যে থেমে থেমে ঘন্টাবাপী গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। সকাল ৯টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি চলমান রয়েছে। এতে জনমনে বেড়েছে আতংক, ভীতি।
স্থানীয়রা জানায়, সোমবার সন্ধ্যায় ও মঙ্গলবার সকালে দুই দফায় বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ আনুমানিক ১০০০ রাউন্ড গুলি বিনিময় করেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। গুলি বিনিময়কালে স্থানীয়দের বাড়ি ঘরের আসবাপত্রে গুলি এসে পড়েছে। এতে আসবাপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে গোলাগুলির ঘটনায় সম্পর্কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ হতাহতের সুনির্দিষ্ট খবর দিতে পারেনি।
বাঘাইছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আহম্মেদ বলেন, আমরা জেএসএস ও ইউপিডিএফের গোলাগুলির সংবাদ পেয়েছি। তবে এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় হতাহতের সুনির্দিষ্ট কোনো খবর পাওয়া যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।
৩৫নং বঙ্গলতলি ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বঙ্গলতলি এলাকায় সকাল থেকে বৃষ্টির মতো গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা গেছে। লোকজন সেখানে যাওয়া যাচ্ছে না। তাই হতাহতের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। যারা গুলিবর্ষণ করছে তারা জানবে হতাহতের খবর। এলাকাটি জেএসএস (সন্তু) এবং ইউ পিডিএফ সীমান্তবর্তী অধ্যুষিত এলাকা বলে তিনি জানান। এদিকে গুলিবর্ষণের ঘটনার কারণে পুরো এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সোমবার (১৩ মে) দুপুরে প্রতীক বরাদ্দের পর বাঘাইছড়িতে পুরোদমে প্রচারে নেমেছেন প্রার্থীরা। এবার ভোটের মাঠে বড় দুই রাজনৈতিক দলের কোনো প্রার্থী না থাকলেও পাহাড়ে বিবাদমান আঞ্চলিক দুই সংগঠনের হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছে। ভোটের আগে গোলাগুলির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
উল্লেখ, রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষে সাজেক থেকে ভোটের ফলাফল নিয়ে উপজেলা সদরে ফেরার পথে ৯ কি.মি. নামক স্থানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে ৮ জন নিহত হয় এবং আহত হয় ৩৩ জন। তাদের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক সরকারি শিক্ষক ফুলকুমারি চাকমাসহ অনেকে পঙ্গুত্ব বরন করেন।