ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে শিক্ষা জীবন থেকে দুই বছর হারিয়ে গেলেও থেমে থাকেনি বরিশাল জিলা স্কুলের ছাত্র মাহাথির রহমান। ব্লাড ক্যান্সারের সাথে রিতীমতো যুদ্ধ করে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এতে মাহাথিরের সাথে খুশি তার পরিবার ও স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
নগরীর ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সির গ্য্যারেজ এলাকার বাসিন্দা সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী মফিজুর রহমান জামাল ও গৃহিনী হোসনে আরা পলি দম্পতির ছেলে মাহাথির রহমান। যমজ দুই ভাইয়ের আরেকজন মাকতুম রহমান বরিশাল সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ থেকে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
মাহাথির রহমান জানায়, ২০১৮ সালে সপ্তম শ্রেনীতে অধ্যায়নরত অবস্থায় সে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরে। চিকিৎসকের কাছে গেলে বিভিন্ন পরীক্ষার পর জানতে পারে ব্লাড ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে তার শরীরে। এরপর থেকেই তার নিয়মিত চিকিৎসা চলে। ভারতে একটানা ছয় মাস চিকিৎসা হয়। তারপর কিছুটা সুস্থ হয়ে ২০২২ সালে আবার অসুস্থ হয়ে পরে। ওইবছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ফরম পূরণ করেও পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। ওইবছরের ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে তার বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট হয়। ওইসময় তার যমজ ভাই মাকতুম রহমান তাকে স্টিম সেল দিয়েছে। এখনও চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকলেও মাহাথির ভালো রয়েছে।
এসএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে এখন মাহাথির ঢাকার নরডেম কলেজে ভর্তির ইচ্ছে পোষন করেছে। মাহাথির জানিয়ে, আমি তো একজন অসুস্থ রোগী। তাই উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ভবিষ্যতে চিকিৎসক হয়ে মানুষকে সেবা করতে চাই। মাহাথিরের বাবা মফিজুর রহমান জামাল বলেন, ছেলের স্বপ্ন পূরণে সাধ্য অনুযায়ী চেষ্টা করব। বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধানশিক্ষিক পাপিয়া জেসমিন বলেন, ক্যান্সারের মতো এমন মরণব্যাধি নিয়েও এসএসসি পরীক্ষায় মাহাথিরের এমন সাফল্যে আমরা সবাই ব্যাপক খুশি। মাহাথিরের যেকোনো প্রয়োজনে আমরা তার পাশে থাকবো।