বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সারাবিশ্ব হুমকির মুখে রয়েছে। তেমনি বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। জনজীবনের ভোগান্তি বেড়েছে। ব্যয়ের তুলনায় আয় কমেছে। সাম্প্রতিক সময়ে নানান প্রতিকূলতার মধ্যে জীবন-যাপন করছে সাধারণ মানুষ। তার মাঝেও যখন অনিয়মে ভোগান্তি বাড়ে তখন সাধারণের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করবেই। এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নগর এলাকায়। সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নগর এলাকায় নতুন করে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হোল্ডিং ট্যাক্স বেড়েছে ২০০ গুণ। কারও ৫০০ গুণ। যিনি আগে দিতেন ৩ হাজার টাকা, তার ওপর ট্যাক্স ধার্য হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। ৮০০ টাকার বার্ষিক হোল্ডিং ট্যাক্স গিয়ে ঠেকেছে ১৮ হাজার টাকায়। হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে এমন তুলকালাম কাণ্ডে বাসা-বাড়ির মালিক, কাউন্সিলর ও বসবাসকারী নগরবাসীর মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। হোল্ডিং ট্যাক্স কমিয়ে পুনর্নির্ধারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে বিভিন্ন সংগঠন। সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, বর্তমানে নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্সের জন্য ফিল্ড সার্ভে হয় ২০১৯-২০ অর্থবছরে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে তৎকালীন সিসিক পরিষদের বিশেষ সভায় সেটি পাস হয়। নতুন হারে কর ধার্য্যরে অর্থবছর নির্ধারণ করা হয় ২০২১-২২ সাল। ওই অ্যাসেসমেন্টে মোট ৭৫ হাজার ৪৩০ টি হোল্ডিংয়ে ১১৩ কোটি ২৭ লাখ ৭ হাজার ৪৪৫ টাকা গৃহকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেটি অনুমোদনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলে ২০২১ সালের অক্টোবরে তা অনুমোদিত হয়। এখন সেই হারে গৃহকর আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে সিটি করপোরেশন। গৃহকর আদায়ের ক্ষেত্রে অমানবিক ভাবে কর ধার্য না করে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন হলো এভাবে আকস্মিক হোল্ডিং টেক্স বৃদ্ধি করাটা কি সরকারি কর্মকর্তাদের বিবেচনা করা উচিত ছিল না? এতে জনজীবনে কতটা হুমকির মুখে পড়বে তা কি দেখার বিষয় নয়? দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে এমনিতেই মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সব কিছুর দাম বাড়লেও বাড়ছে না মানুষের উপার্জন। এ অবস্থায় অযৌক্তিকভাবে গৃহকর বাড়ানো ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ এর মতো। তাই অস্বাভাবিক হারে কর বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। সিলেটবাসীর নিম্ন আয়ের মানুষের কথা চিন্তা করে সরকার ওই বিষয়ে সীমার মধ্যে গৃহকর ধার্য করলে জনজীবনে স্বস্তি মিলবে।