ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৫ বছর আগে। রাজনৈতিক মারপ্যাচ আর কূটচালে আটকে ছিল ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। অনেক ক্ষতি হয়ে গেল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ৩ তলা এই ভবনটির। ভবনের সুখ ভোগ করার স্বপ্ন নিয়েই ইতোমধ্যে পরপারে পাড়ি দিয়েছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। সবকিছুকে পেছনে ফেলে আজ ২৩ মে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বাধন করবেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ও নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া। কমপ্লেক্সটি উদ্বোধনের খবরে স্বস্থির হাসি হাসছেন জীবিত মুক্তিযোদ্ধারা। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও ইউএনও অফিস সূত্র জানায়, স্বাধীনতার ৪৭/৪৮ বছর পর সরাইলে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকার ১ টি ৪ তলা ফাউন্ডেশনের তৃতীয়তলা ভবন নির্মাণ করেন। ভবনটির নীচতলা ও দ্বিতীয়তলায় ১২ টি দোকান ও তৃতীয় তলায় একটি হলরূম নির্মিত হয়। সেখানেই অফিস কক্ষ করা হয়েছে কমান্ডার ও ডেপুটি কমান্ডারের। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ শে সেপ্টেম্বর ভবন নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা। ইউএনও ছিলেন উম্মে ইসরাত। ওই বছরের শেষের দিকে কাজটি শেষ হয়। তৎকালীন ইউএনও ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ বি এম মুসার কাছে ভবনটি হস্তান্তর করেন ঠিকাদার। বারবার চেষ্টা করেও রাজনৈতিক মারপ্যাচ ও কূটচালের কারণে ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করতে পারেননি ইউএনও। দেখতে দেখতে পাঁচ বছরে তিনজন ইউএনও বদলি হয়ে গেলেও ভবনটি উদ্বোধন করতে পারেননি কেউই। দীর্ঘ সময় অব্যহৃত থাকায় ভবনের ফার্ণিশার্স কম্পিউটার সহ অন্যান্য মূল্যবান মালামাল নষ্ট হয়েছে।
ময়লা আর বালুর স্তুপ পড়েছে প্রতিটি কক্ষে। ভবনের প্রধান ফটক ও চারিদিকের খালি জায়গাকে মানুষ মলত্যাগ করে ময়লার ভাগাড় বানিয়েছে। ক্ষোভে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দ ভবনটি উদ্বোধনের জন্য অগণিত বার উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায় বিষয়টি আলোচনা করেছেন। কোন প্রতিকার পাননি। ভবনটিতে ওঠে সভা সেমিনার করা, আড্ডা মারার স্বপ্ন দেখতে দেখতে মৃত্যুবরণ করেছেন অনেক মুক্তিযোদ্ধা। তাদের স্বপ্ন আর পূরণ হয়নি। এসব বিষয়ে অনলাইন পোর্টাল এফএনএস-এ পর্যায়ক্রমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। অবশেষে ৫ বছরেরও অধিক সময় পর বৃহস্পতিবার অনেক প্রতিক্ষিত ওই ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
বিষয়টিকে ঘিরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে বইছে স্বস্থির আনন্দ উৎসাহ ও উদ্দীপনা। সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মো. মেজবা উল আলম ভূঁইয়া বলেন, আরো আগেই উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। তবে উপজেলা নির্বাচনের কারণে আর হয়ে ওঠেনি। আজ মাননীয় এমপি মহোদয় ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। আমরা ভবনটি স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহারের জন্য উম্মূক্ত করে দিব। সরকারী নিয়মে চলবে এটির ব্যবহার।