অসুস্থ কথাটা ছোট কিন্তু এর গভীরতা অনেক বড়। সুস্থ থাকতে মানুষ কত কিছুই না করে। একটু শান্তির জন্য মানুষের আক্ষেপের শেষ নেই। পৃথিবীতে নানান ধরনের রোগ পরিলক্ষিত হয়, এই রোগগুলোর মধ্যে একটি রোগ হলো বাত ব্যথা যা অনেক মানুষকে যন্ত্রণার আগুনে পুড়ছে। সঠিক সময় উপযুক্ত চিকিৎসা না নিলে গিরা ব্যথার কারণে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ একসময় কাজ করতে অক্ষম হয়ে যায়। রিউমাটোলজি ফাউন্ডেশন অ্যান্ড রিসার্চ (পিএনআরএফআর) ট্রাস্ট এর তথ্য মতে, দেশের মোট জনসংখ্যার ১৯ শতাংশ বা ২ কোটি ৫ লাখ মানুষ কোমর ব্যথা বাতে (লাম্বার স্পন্ডিলাইটিস) ভুগছে। সংগঠনটি জানায়, ২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য অনুযায়ী দেশের ১১ কোটি প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মধ্যে প্রায় ৮০ লাখ মানুষ হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিসে ভুগছেন, যা মোট প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ৭ শতাংশ। মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশে বাত ব্যথার রোগীদের তথ্য তুলে ধরা হয়। বলা হয়, বিশ্বে দেশভেদে ২৫-৫০ শতাংশ মানুষ বিভিন্ন গিরা বা পেশির ব্যথায় ভুগছেন। নারীরা পুরুষের তুলনায় বেশি ভুগে থাকেন। গিরা ব্যথার কারণে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ কাজ করতে অক্ষম হয়ে যায়। হাঁটুর অস্টিওআর্থ্রাইটিসে ভুগছেন নারীরা বেশি। পাশাপাশি শারীরিক স্থূলতা ও হাঁটুতে আগে আঘাত পাওয়া ব্যক্তিদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যৌবন বয়সের বাত রোগীদের স্পন্ডাইলো আর্থ্রাইটিসে (এসপিএ) আক্রান্তের হারও উদ্বেগজনক। গবেষণার প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দেশের ১ শতাংশ বা সাড়ে ১৩ লাখ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। এতে মেরুদণ্ডের সাথে গিঁট বা অস্থিসন্ধি এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আক্রান্ত হয়ে থাকে। তথ্য থেকে জানা যায়, দেশের প্রায় ১১ লাখ মানুষ সোরিয়েটিক আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন। এটি গিঁটের এক ধরনের প্রদাহ, যা সোরিয়াসিস বা চর্ম রোগীদের মধ্যে বৃদ্ধি পায়। আক্রান্ত গাঁটগুলো ফুলে যায় এবং প্রায়ই যথেষ্ট যন্ত্রণাদায়ক হয়ে ওঠে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগে ভুগছেন। ২০২২ সালের গণশুনানি অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ৫০ ঊর্ধ্ব বয়সী মানুষ প্রায় ৩ কোটি। সেই হিসেবে দেশের প্রায় ৬০ লাখ মানুষ এই রোগে ভুগছেন। তবে উদ্বেগের বিষয় এই হাড়ক্ষয় রোগে মেরুদণ্ডের হাড় ভাঙার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি এবং এই রোগের কারণে মৃত্যু ঝুঁকি প্রায় ৮ গুণ বেড়ে যায়। এমন যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু ও অক্ষম হওয়া থেকে মুক্তির জন্য উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে। এছাড়াও রোগীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে হবে।