পড়াশোনা করে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হতে বিদ্যালয়ে সন্তানদের পাঠায় পরিবার। ফলাফল ভালো করার জন্য নিয়মিত ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা। যদি সারা বছর পড়েও ফলাফল শূন্য হয় তখন বিষয়টা কেমন দাঁড়ায়? আর যারা শিক্ষক তারা কি প্রকৃত শিক্ষক, প্রশ্ন থেকেই যায়। বর্তমানে উন্নয়নশীলের পথে হাঁটছে দেশ। কিন্তু শিক্ষার মত গুরুত¦পূর্ণ বিষয়ে যদি ফলাফল এমন শূন্য হয় তাহলে কি দেশ উন্নয়নশীল হবে? সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে এমনি একটি ঘটনা ঘটেছে। যা কল্পনার বাহিরে। চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় সারা দেশে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই হাজার ৯৬৮টি। কিন্তু ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীই এবার পাস করেনি! এবার পরীক্ষায় অংশ নেয়া মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৮৬১টি। এর মধ্যে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই হাজার ৯৬৮টি। এ পরীক্ষার ফলাফলে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। এ বছর পাসের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। ছাত্রের চেয়ে ১৫ হাজার ৪২৩ জন বেশি ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে। এবার ফলাফলে সারাদেশে মোট পাস করেছে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষ হয় গত ১২ মার্চ। এবার মোট ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছিল মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন। যদিও ৮৩.৪ শতাংশ পাশের হার রয়েছে, তবুও হতাশার বিষয় হলো ৫১ টি বিদ্যালয়ের কেউই পাশ করে নাই! বিষয়টা ভেবে দেখলে অবিশ্বাস্য। তাহলে শিক্ষকরা সারা বছর কি পড়াশুনা করিয়েছে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকদের কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের কাজ কি শুধু মাসে মাসে বেতন নেওয়া? তাদের থেকে এর জবাবদিহিতা নিতে হবে সরকারকে। এভাবে চলতে থাকলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। অভিভাবকরা শিক্ষার ক্ষেত্রে আস্থা হারিয়ে ফেলবে এবং ছেলে-মেয়েদের বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করাবে না। ভয়াবহ পরিস্থিতি না হওয়ার আগেই এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। যেসব বিদ্যালয়ে পাশের হার শূন্য তাদের বিদ্যালয়ে তদন্ত করে কারণ গুলো চিহ্নিত করে পরিত্রাণ করতে হবে।